অল্প পুঁজিতে ৬ ধরনের কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়া
মোহাম্মদ রকিব
গতানুগতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চাকরির আশায় বসে না থেকে ভিন্নধর্মী পেশা বা ব্যবসায় নিয়োজিত হলে খুব সহজেই উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়া যায়। আপনি চাইলে স্বল্প পুঁজিতে পোশাক শিল্পে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। পোশাক শিল্প বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত, দ্রæত পরিবর্তনশীল এবং প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা। নতুন উদ্যোক্তারা পেশা হিসাবে এই লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আজকের নিবন্ধে আমরা আলোচনা করব এমন ৬টি পোশাক ব্যবসায়ের ধারনা নিয়ে, যে ব্যবসায়গুলো স্বল্প পুঁজি দিয়ে সহজেই শুরু করা যায়।
১। গজ কাপড়ের ব্যবসা : সব শ্রেণির মানুষের মনে রয়েছে গজ কাপড়ের প্রতি আলাদা এক ভালো লাগা। অনেকেই রেডিমেড কাপড় কেনার পরিবর্তে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মাপ ও ডিজাইন দিয়ে পোশাক তৈরি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এছাড়াও আমাদের দেশের গজ কাপড় প্রতি বছরই প্রচুর পরিমাণে বিদেশের বহু দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তাই ব্যবসার দৃষ্টিকোণ থেকে গজ কাপড়ের ব্যবসা হতে পারে একটি সৃজনশীল ও কার্যকরী ব্যবসা ক্ষেত্র।
২। ভাড়া পোশাকের ব্যবসা : পোশাক ভাড়া দেয়ার ব্যবসায়ও বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে ছেলেদের বিয়ের পোশাক যেমন, শেরওয়ানি, পাগড়ি, নাগরা জুতা ইত্যাদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। যেহেতু এসব পোশাক পরবর্তীতে বেশি ব্যবহৃত হয় না, তাই অনেকেই এত দাম দিয়ে না কিনে ভাড়ায় পোশাক নিয়ে থাকেন।
৩। পোশাকে এমব্রয়ডারির ব্যবসা : এমব্রয়ডারি হচ্ছে কাপড়ের উপর নকশা বা বিশেষ কোন ডিজাইন সুচ সুতা অথবা মেশিনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা। পোশাকের ধরণ ও অন্যান্য সামগ্রীর বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন নকশা এঁকে বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে সুঁচ অথবা মেশিনের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয়। এমব্রয়ডারির ব্যবসায় করতে পুঁজির পরিমাণ খুব বেশি লাগে না। মার্কেটে চাহিদাও আছে প্রচুর।
৪। পোশাকে কারচুপির ব্যবসা : কারচুপির মাধ্যমে পোশাকে বাহারি রঙের নান্দনিক পাথর, জরি, চুমকি বসিয়ে নকশা তৈরি করা হয়। ওড়না, জামা অথবা শাড়িতে কারচুপির কাজ থাকলে দাম বেড়ে যায় বহু গুণ। হাতের সুনিপুণ নকশায় কারচুপির মাধ্যমে একটি সাধারণ পোশাককে অসাধারণ করে তোলা যায়। কারচুপির কাজে কোন যান্ত্রিকতা নেই, পুরোটাই হাতের কারুকাজ। আপনি চাইলে স্বল্প পুঁজি দিয়ে এই ব্যবসায় শুরু করতে পারেন। ৫। বøক ও বাটিকের ব্যবসা : অল্প পুঁজিতে ও ঘরে বসেই এই ব্যবসাটি শুরু করা যায় বলে অনেক উদ্যোক্তাই এই ব্যবসাটি শুরু করতে আগ্রহী। আপনার নিকটস্থ স্থানীয় বাজার বা মার্কেটে ছোট একটি দোকানে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। আবার চাইলে আপনার বাড়িতেও এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। নান্দনিক পোশাক হিসেবে বিভিন্ন বøক ও বাটিকের কাজ করা পোশাকের চাহিদা প্রচুর। এই ব্যবসা শুরু করার আগে কাজ শিখে নিতে হবে।
৬। বুটিক হাউস : সৃজনশীল মানুষের জন্য বুটিক ব্যবসা হতে পারে একটি আদর্শ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বুটিক হাউসের ব্যবসার চাহিদা ব্যাপক। ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে এ সেক্টরটি। বুটিক হাউসকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে যে কেউ বদলাতে পারেন নিজের ভাগ্য। ছোটখাটো বুটিকের জন্য প্রাথমিক পুঁজি ৫০-৬০ হাজার টাকার মতো লাগবে।
বর্তমানে আমাদের দেশে এবং দেশের বাইরে বুটিক হাউসের পোশাকের যথেষ্ট কদর রয়েছে। তবে সেটি নির্ভর করে পণ্যের ডিজাইন, কাপড়ের সেলাই, গুণগত মান, আধুনিকতা ও ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার ওপর। ক্রেতাদের সন্তুষ্টি এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে আপনার পণ্যটিও ভালো চলবে।
এখন হলো অনলাইনের যুগ। এসব ব্যবসায় আপনি চাইলে ঘরে বসেই নিজের ই-কমার্স সাইট সাজিয়ে করতে পারেন। উপরোক্ত ব্যবসাগুলো শুরু করার জন্য বিশেষ কোনো যোগ্যতার ও বিশাল অংকের বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। আধুনিক ডিজাইন আইডিয়া ও সৃজনশীলতাই এই ব্যবসাটির প্রধান যোগ্যতা। আর শুধু মাত্র সততা ও নিষ্ঠাকে পুঁজি করে এই ব্যবসায় লাভবান ও সফল হতে পারেন। তথ্যসূত্র: ইয়ুথ কার্নিভাল।