আগামীর বাংলাদেশ গড়তে নারী উদ্যোক্তারা অসামান্য ভূমিকা রাখবেন, বলেছেন ড. আতিউর রহমান
ফাতেমা আহমেদ : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারপারসন, অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকখানি এগিয়ে এসেছে এবং এর ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। আমাদের এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নারী উদ্যোক্তারা অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। নিজেদের আয়ের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তারা অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। আগামীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সোনালি সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে এই নারী উদ্যোক্তারা আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।’ ইত্তেফাক অনলাইন
শনিবার ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘উইমেন এজ জব ক্রিয়েটরস ২০১৯’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সেমিনার আয়োজন করে ইয়ুথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্টারপ্রেনারস।
আতিউর বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং সদ্য স্বাধীন দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় যাতে নারীরা অবদান রাখতে পারেন সে জন্য নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়ে গেছেন। তার এ চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে বাংলাদেশের সংবিধানে এবং এর আলোকেই বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন সুবিবেচনাভিত্তিক নীতি প্রণয়ণ ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। আর এর ফলে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নের মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জেন্ডার সমতার সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এছাড়াও প্রশাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতিসহ সমাজের সকল ক্ষেত্রেই আজ নারী নেতৃত্ব তুলনামূলক বেশি দৃশ্যমান। তবে ভুলে গেলে চলবে না যে, এখনো আমাদের অনেক পথ যেতে হবে এবং বাংলাদেশের নারীরা এখনো কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিক জীবনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কিছু ব্যতিক্রমি নীতি উদ্যোগের পরও এখনও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।’
তবে বেশ কিছু ব্যাংকে নারী উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য উদ্ভাবনীমূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে। এ সমস্ত কর্মসূচিকে সমন্বিত করার দরকার রয়েছে, যাতে নারী উদ্যোক্তারা সহজেই এগুলোর সুফল পেতে পারেন। সর্বাধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা করা খুবই সম্ভব। এছাড়াও এ বছর জাতীয় বাজেটে উদীয়মান উদ্যোক্তাদের জন্য যে একশো কোটি টাকার স্টার্ট-আপ ফান্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে তার একটি যথাযথ ভাগ যেন দেশের নারী উদ্যোক্তারা পান তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন ড. আতিউর রহমান।
দেশের নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এক্ষেত্রে ব্যক্তি খাত এবং নাগরিক সমাজের উদ্যোগও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে ড. আতিউর বলেন যে, ‘সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে নারীর ক্ষমতায়ন করা গেলে তা নারীর-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করবে এবং ফল স্বরূপ দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাও বেগবান হবে।’