জাতিসংঘ মহাসচিব বললেন, কাশ্মীরে বদল করা যাবে না স্ট্যাটাস কো, সমাধান হতে হবে জাতিসংঘের রেজ্যুলেশন ও সিমলা চুক্তির আলোকে
আসিফুজ্জামান পৃথিল : জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কোনোভাবেই ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করা উচিৎ হবে না। তিনি বলেন, কাশ্মীরের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান জাতিসংঘের রেজ্যুলেশন নম্বর ৩৯ মোতাবেকই হতে হবে। সিমলা চুক্তির বাস্তবায়ন ছাড়া এই সমস্যার সমাধান কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দ্য হিন্দু, এআরওয়াই, ডন, ওয়েব।
মহাসচিব গুতেরেস কাশ্মীর ইস্যুতে দুই পক্ষকেই ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। সিমলা চুক্তি অনুযায়ী এই সমস্যার সমাধান হতে হবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতেই। তৃতীয় পক্ষের এখানে নাক গলানোর সুযোগ নেই। এছাড়াও সিমলা চুক্তি বলছে, কাশ্মীরের স্ট্যাটাস কো বা বর্তমান অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে না। আর জাতিসংঘের রেজ্যুলেশন বলছে, কাশ্মীরিদের গণভোট ছাড়া বর্তমান স্ট্যাটাস কো পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। গত সোমবার জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে কেন্দ্র সরকার। এছাড়াও লাদাখকে কাশ্মীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পাকিস্তান বলছে, এই ঘটনা কোনোভাবেই অভ্যন্তরীণ বিষয় নয় এবং অবৈধ। তারা এই বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব গুরুত্বের সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এবং তিনি উভয়পক্ষকে ধৈর্য্য ধরারও আহ্বান জানান। মহাসচিব ভারত পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিমলা চুক্তির বিষয়টিও স্বরণ করিয়ে দিতে চান। এই চুক্তিতে বলা হয়েছে কাশ্মীরের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতেই নেয়া হবে।’
সিমলা চুক্তিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সমস্যা সমাধানে যুগান্তকারী চুক্তি বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর স্বাক্ষরিত হয় সিমলা চুক্তি। এই শান্তিচুক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয় ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোল মেনে চলবে। দুপক্ষই এলওসিকে নিজেদের প্রকৃত সীমানা মেনে নেয়। এর ভিত্তিতেই এতোদিন কাশ্মীরের সীমানা মেনে চলা হচ্ছে। চুক্তিতে পাকিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। এই চুক্তির প্রেক্ষিতেই মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দী। সম্পাদনা : ইকবাল খান