ড. জাহিদ হোসেন বললেন, ‘কাঁচা চামড়া’ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে
আমিরুল ইসলাম : বিশ^ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘কাঁচা চামড়া’ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাজারে প্রতিযোগিতা কমে যাবে। কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে শুধু ট্যানারি মালিকরা লাভবান হবে।
তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হলে যারা চামড়া নিয়ে ব্যবসা করে তাদের ক্ষতি হবে। রপ্তানির ব্যবস্থা খোলা থাকলেই যে তারা রপ্তানি করবে এমন কোনো কথা নেই। ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাজারে সঠিক মূল্য পেলে তারা এখানেই বিক্রি করবে। যারা চামড়া ব্যবহার করে বিভিন্ন দ্রব্য উৎপাদন করছে তারাও একটা প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে। এখন তো তারা একটা ক্যাপটিভ মার্কেট পেয়ে গেছে। এখন তো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। জুতা তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করতে না পারলে জুতার দামও তো স্থানীয় বাজারে কমে যাবে। সেটা যারা জুতা তৈরি করছে তাদের জন্য ভালো হবে না। একই যুক্তি যারা চামড়া বিক্রি করছে তাদের কাছেও প্রযোজ্য। রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া, একটা বাজারকে সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেয়া। এ ধরনের একটা একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে কি ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তার প্রমাণ এবারই মিলবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা কোথায় চামড়া বিক্রি করবে সেটার সিদ্ধান্ত সরকাররের দেয়ার কথা নয়। সরকারের কাজ হচ্ছে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা। বাজারে প্রতিযোগিতা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা? সিন্ডিকেশন হচ্ছে কিনা? এগুলো দেখা। ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরে বিক্রি করবে না ভেতরে বিক্রি করবে? সেটা কোথায় ভালো মূল্য পাবে তার উপর নির্ভর করবে। এখন যদি বলা হয় চামড়া বাইরে বিক্রি করা যাবে না তখন ট্যানারি শিল্পকে সাহায্য করা হয়। কিন্তু যারা কাঁচা চামড়ার ব্যবসা করছে তাদের তো ক্ষতি হবে। আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ যে অনেক সময় একটা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে সেটার উদাহরণ এবারই আমরা দেখলাম। এটা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের নীতি থেকে দূরে থাকাই উত্তম হবে। এখন তো কয়েকজন ব্যবসায়ী কারসাজি করে চামড়া না কেনার কারণে ‘কাঁচা চামড়ার’ দাম পড়ে গেলো, এ সুযোগটা তৈরি হতো না যদি বাইরে বিক্রি করার বিকল্প থাকতো। এখন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বলা হলো চামড়া বাইরে বিক্রি করা যাবে। এখন বায়ার পেতে পেতেই চামড়া শেষ হয়ে যাবে।