মুরগি খামারের বায়োগ্যাসকে সিএনজিতে রূপান্তর করলেন টেকনাফের কবির হোসেন
আমান উল্লাহ : কক্সবাজারের টেকনাফে মুরগির খামার থেকে উৎপন্ন বায়োগ্যাসকে সিএনজিতে রূপান্তরের একটি প্রকল্প সাড়া জাগিয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও ইতোমধ্যে কার, মাইক্রো মালিকরা এ ষ্টেশন থেকে গ্যাস সংগ্রহ করে তাদের চাহিদা পূরণ করছেন। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের খোনকার পাড়া এলাকায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাছেই নিজের মুরগির খামারের পাশেই সাগর ফিলিং ষ্টেশন নামে এ প্রকল্প গড়ে তুলেন কবির হোসেন।
কবির আহমদ বলেন, কালের পরিক্রমায় ইয়াবা শহরে পরিগণিত হতে থাকে। সম্প্রতি এই শহরের কয়েক কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ সড়কের অতি সন্নিকটে প্রায় এক যুগ ধরে মুরগির খামার ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ১২ বছরে খামারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তার রয়েছে ৬ টি খামার। যেখানে প্রায় ৪৫ হাজার মুরগি ডিম দিচ্ছে। এসব মুরগির বিষ্ঠা নিয়ে বেকায়দায়
সহকর্মী এক খামারির পরামর্শে গড়ে তুলে বায়োগ্যাস প্রকল্প। এতে তিনি একদিকে পরিবেশ রক্ষা করবেন অন্যদিকে উৎপাদিত বায়োগ্যাস এলাকায় বিক্রি করবেন। কিন্তু উৎপাদতি গ্যাস কোথাও কাজে লাগাতে পারছিলেন না। সিদ্ধান্ত নিলেন আরো বেশি আর্থিক ঝুঁকি নেবেন। বায়োগ্যাসকে সিএনজি জাতীয় গ্যাসে রূপান্তরের। তাই চেষ্টা করতে লাগলেন চার বছর ধরে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বায়োগ্যাস প্রকল্প দেখে আসেন, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের পরার্মশ নিলেন, তবে কোন কাজ হচ্ছিল না। শেষে ভারত সফর করে অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন। তা প্রয়োগও করলেন। সফল হলেন। চলতি বছরের প্রথম থেকে এ প্রকল্প আলোর মুখ দেখতে পেলো। খরচ হলো প্রায় আড়াই কোটি টাকা। কোন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে আর্থিক সহযোগিতা না নিয়ে খামারের আয়ের টাকা দিয়েই তিনি এ সফলতা র্অজন করেছেন বলে জানান কবরি আহমদ। এখন প্রতিদিন তার সিএনজি স্টেশন থেকে ১০/১৫ হাজার টাকার গ্যাস বিক্রি করছেন। ১০টি সিলিন্ডারে বায়োগ্যাস হতে সিএনজি রূপান্তর করে তিনি কার-মাইক্রোতে সীমিত আকারে গ্যাস সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছেন। র্দীঘ চার বছরের ধৈর্য ও একান্ত প্রচেষ্ঠায় এ ধরনের একটি অনিশ্চিত কাজ বাস্তবায়ন করতে পেরে বেশ খুশি। তার দাবি এটি দেশে প্রথম এ ধরনের একটি প্রকল্প।
মাইক্রো চালক মো. শরীফ বলেন, অন্যান্য সিএনজি গ্যাস হতে বায়োগ্যাস একটু হালকা মনে হয়। অর্থাৎ মনে হবে চালানোর সময় গাড়ি একটু ভারী ভারী। আসলে টুনিং টা একটু এডজাস্ট করে দিতে হয়। তখন পুরোপুরি ঠিক হয়ে পরিষ্কারভাবে গাড়ি চালানো যায়। তিনি আরো বলনে, আমাদের গাড়িগুলো সিএনজি ফরম্যাটে এডজাস্ট করা থাকে। যখন বায়োগ্যাস ব্যবহার করা হয় তখন টুনিং একটু পরির্বতন করে দিলেই হয়।
গাড়িচালক মুজিব বলেন, টেকনাফে এই গ্যাস পাওয়ার ফলে গাড়ি মালিকরা অনেকে সাশ্রয়ী মূল্যে ভাড়া যেতে পারছেন। টেকনাফ থেকে বায়োগ্যাস নিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম যায়। আর সেখান থেকে সিএনজি গ্যাস নিয়ে টেকনাফ আসছি এখন আমরা। এতে আমরা আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হচ্ছি।
সাগর ফিলিং স্টেশনের মালিক কবির আহমদ বলেন, এ প্রকল্পটি ছড়িয়ে দিতে পারলে গোটা দেশে আরো অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হবে। তাই সরকারি সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান ও টিএম হুদা