বকেয়ার হিসেব মিলছে না, ব্যবসাতেই নেই ৩০ শতাংশ আড়তদার
মেরাজ মেভিজ : ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকার প্রাথমিক হিসাবে ৪০০ কোটি টাকার দাবি করেছিলেন আড়তদাররা। কিন্তু তৈরি হতে যাওয়া খসড়া হিসেবে অর্থের এমন অংক মেলানো যাচ্ছে না কিছুতেই। জেলাভিত্তিতে আড়তদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরিতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭ শতাংশের হিসেব। বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন জানালেন এ ব্যবসা সংশ্লিষ্ট প্রায় ৩০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিই বিদায় নিয়েছেন এ ব্যবসা থেকে।
এদিকে গতকাল রাতে দুই পক্ষের বিশেষ বৈঠকে পাওনা টাকার খসড়া একটি তালিকা তুলে দেয়ার কথা রয়েছে ট্যানারি ব্যবসায়ী দুই সংগঠনের হাতে। আগেই ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এফবিসিসিআই) বৈঠকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো তিন কিস্তিতে বা তিনটি তালিকার হিসাবে নিজেদের দেনা পরিশোধ করবেন ট্যানারি মালিকরা।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল বিকেলে এ প্রতিবেদককে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা একটা তালিকা তৈরি করছি। যা এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। তবে এটা তৈরি করতে গিয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ আড়তদারের খোঁজই পাচ্ছি না। যারা এতোদিনে এ ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৩-১৪টি জেলার হিসাব পাওয়া গেছে।
তথ্যমতে, বর্তমানে ১০ জেলার আড়তদারদের কাছে ট্যানারি মালিকদের বকেয়ার পরিমাণ ৫৮ কোটি ৫৩ লাখ ২ হাজার ৮৬৪ টাকা। এসব জেলার চেম্বার অব কমার্সের হিসেবেই উঠে এসেছে এ তথ্য। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ট্যানারি মালিকদের কাছে সর্বোচ্চ ২৬ কোটি টাকা পাওনার তথ্য জানিয়েছে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স।
বাকি চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে সিলেট মেট্রোপলিটনের ৫ কোটি ১২ লাখ ১৮ হাজার ৩৩৯ টাকা ও সিলেটের ৫ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার ৩৩৯ টাকা। এছাড়া নরসিংদির ৫ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার ৬০০ টাকা, নওগাঁর ৪ কোটি ৮৭ লাখ ৪৩ হাজার ৮৯৫ টাকা, বরিশালের ৩ কোটি ৬ লাখ, ঝিনাইদহর ৩ কোটি, ভৈরবের ২ কোটি ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫০ টাকা, বগুড়ার ২ কোটি এবং শেরপুরের আড়তদাররা পাবেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার ৪৪১ টাকা।
প্রাথমিকভাবে ট্যানারি মালিকদেরও একটি হিসাব তৈরির কথা থাকলেও তা থেকে সরে এসেছেন তারা। আড়তদারদের দেয়া হিসাবটিই যাচাই বাছাই শেষে পাওনা পরিশোধের জন্য বেছে নেবেন। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিশেনের (বিটিএ) কোষাধ্যক্ষ মিজানুরের ভাষ্য, আমরা একটি হিসাব তৈরি করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। আড়তদাররা যে হিসাব দেবেন, সেটাই যাচাই বাছাই করবো আমরা। গতকাল আমাদের দুই সংগঠনের সঙ্গে আড়তদারদের বৈঠক রয়েছে।
এফবিসিসিআইর সঙ্গে পরের বৈঠকে এ হিসাবই চূড়ান্ত হবে। ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে সে বৈঠক।
ট্যানারি মালিকরা ১৯৯০ থেকে ২০১০, ২০১১ থেকে ২০১৫ এবং ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তিনটি স্তরে বকেয়া চামড়ার দাম পরিশোধ করার দাবি জানান। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বকেয়া পরিশোধের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি শিল্পের প্রতিনিধিরা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান