বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সবার ওপরে, জানালেন অর্থমন্ত্রী
ফাতেমা আহমেদ : গত ১০ বছরে জিডিপিতে কারেন্ট প্রাইস মেথডে (চলতি বাজার মূল্য) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বে সবার ওপরে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। রাইজিংবিডি, বাংলানিউজ, পূর্বপশ্চিম অনলাইন
তিনি জানান, ‘২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত অর্থাৎ গত ১০ বছরে জিডিপিতে কারেন্ট প্রাইস মেথডে (চলতি বাজার মূল্য) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বে সবার ওপরে রয়েছে।’
‘দ্য স্পেক্টেটর ইনডেক্স’ কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের ২৬টি শীর্ষ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তথ্যের ভিত্তিতে এ বিষয়টি তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শতকরা ১৮৮ ভাগ এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে চীন ১৭৭, ভারত ১১৭, ইন্দোনেশিয়া ৯০, মালয়েশিয়া ৭৮, অস্ট্রেলিয়া ৪১ এবং ব্রাজিল ১৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে চলমান অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকলে খুব সহসাই বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও জোরালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
এ অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী সকলকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। অর্থনৈতিক খাতে আরও শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশ তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে
(প্রথম পৃষ্ঠার পর)নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে দু’টি আর্মড ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আসার পরপরই প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৮০ জনের এক আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে তা বাতিল করে ৮৮০ জনের টিম গঠন করে পাঠানোর উদ্যোগ চলছে।
অন্যদিকে, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রস্তাবে ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের যৌথ ক্যাম্প স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য জরুরী ভিত্তিতে স্থান চিহ্নিত করে জমি বরাদ্দের উদ্যোগের কথা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র।
শরণার্থী এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পারে সরকার। তবে তা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেয়ার মতো সক্ষমতা সরকারের নেই, সেজন্য স্থায়ীভাবে কমিউনিটি পুলিশের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, অপরাধ বন্ধ এবং ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে অপরাধ না করতে পারে সেজন্য কাঁটাতারের প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৭টি আশ্রয় শিবিরের ১৫৭ কিলোমিটার জুড়ে এই প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। তিন ফুট উচ্চতার গাঁথুনির ওপর এ প্রাচীর নির্মাণের প্রক্রিয়া এরইমধ্যে শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্রে জানা গেছে, দাপ্তরিক উদ্যোগ শেষ করে এনেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাঠপর্যায়ে প্রাচীর নির্মাণের কাজ সেনাবাহিনীর করার কথা রয়েছে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান মনে করেন, এভাবে প্রাচীর দিয়ে রোহিঙ্গাদের আটকে রাখা যাবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠাতে পারলে স্থানীয় নিরাপত্তা যেমন হুমকির মুখে পড়বে, তেমনি তার প্রভাব জাতীয় নিরাপত্তায়ও পড়বে।
পাশাপাশি কক্সবাজার ও বান্দরবানের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা এখন ক্যাম্প থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন স্তরের নিরাপত্তা চেকপোস্ট থাকার পরেও কোনোভাবে আটকে রাখা যাচ্ছেনা তাদের। শরর্ণাথী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে ৫৮ হাজার ৩৫১ জন রোহিঙ্গাকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে ক্যাম্পে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য ৫৩৬ দালালকে ধরে এনে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া নানা অপরাধে গত দুই বছরে ৪০ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় শতাধিক গ্রেপ্তার হলেও মামলা হয়েছে সাড়ে চারশো। সম্প্রতি স্থানীয় যুবলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় গোটা ক্যাম্প এলাকায় আইনশৃঙ্খলা জোরদার করা হয়। ওই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান