স্বায়ত্তশাসিত ৬৮ প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত ২ লাখ ১২ হাজার ১শ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে আনতে আইন অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
আনিস তপন : এ জন্য স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০১৯-এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, আমাদের স্বশাসিত সংস্থারগুলোর লেটেস্ট ব্যালেন্স দেখা গেল ২ লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা স্থিতি বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর হিসেবে আছে। এ টাকাগুলো কোনো ভালো কাজে বিনিয়োগ হচ্ছে না। এ জন্য সরকারের এ আইনের মাধ্যমে নীতি হলোÑকিছু প্রভিশন রেখে সরকারের কোষাগারে নিয়ে আসা এবং জনকল্যাণমূলক কাজ করা। আমাদের অনেক প্রজেক্ট রয়েছে যেগুলো আর্থিক সংকটের কারণে সেখানে অর্থায়ন করা যায় না। তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো তাদের পরিচালন ব্যয়, নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বার্ষিক ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জমা রাখবে। আপৎকালীন ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিচালক ব্যয়ের ২৫ শতাংশ সমপরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ করতে পারবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের বিধি মোতাবেক যদি পেনশন, প্রভিডেন্ড ফান্ড থাকে সেটাও রেখে দেবে। এমন প্রয়োজনীয় অর্থ রাখার পর বাকি অর্থটা সরকারি কোষাগারে দেবে প্রতিষ্ঠানগুলো।
স্বায়ত্তশাসন স্পিরিটের সঙ্গে এ বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, এই আইনটি অনুমোদনের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্তশাসনে কোনো সমস্যা হবে না। আর্থিক ডিসিপ্লিনেও কোনো সমস্যা নেই। এটা হচ্ছে, ওনাদের যে অলস অর্থ আছে তা সরকারি বিনিয়োগে কাজে লাগানো। তাদের যদি টাকার প্রয়োজন হয় তবে সরকার তো তা দিচ্ছে বলেন সচিব।
উদ্বৃত্ত অর্থ আছে এমন স্বায়ত্তশাসিত ৬৮টি সংস্থার তালিকা তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এরমধ্যে ২৫টি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের তালিকা রয়েছে। যেমন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ২১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, পেট্রোবাংলার ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, ডিপিডিসির ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম বন্দরের ৯ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষাবোর্ডগুলোর অনেক অলস টাকা রয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের উদ্বৃত্ত ৪২৫ কোটি টাকা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকা রয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আইনের বিধান সুপারসিড করে এ আইনের বিধান কার্যকর করা হবে তাও বলেন সচিব। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান