ঢাকা উত্তরের ৩ হাজার ৫৭ কোটি টাকার বাজেট
সুজিৎ নন্দী ও শিমুল মাহমুদ : মশা নিয়ন্ত্রণে গত বারের চেয়ে ১৮২ শতাংশ বাড়িয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার নগর ভবনে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম এ বাজেট ঘোষণা করেন।
ডিএনসিসির নতুন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে থেকে ১ হাজার ২৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১ হাজার ৮২২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বেশি।
নতুন বাজেটে মশা নিয়ন্ত্র¿ণ কার্যক্রমের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ থেকে ১৮২ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাতের সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শুরুতেই মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মুজিব বর্ষ ভিশন ২০৪১ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে (এসডিজি) সামনে রেখে ডিএনসিসির কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। মেয়র নির্বাচনের সময় আমি মশক নিয়ন্ত্রণ, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলবদ্ধতা নিরসন, সেবাসমূহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাটের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলাম। তাছ্ড়াা নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ার ডিএনসিসির বর্তমান ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি। আয়তনও ৮২ দশমিক ৬২ বর্গ কিলোমিটার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৬ দশমিক ২২৮ বর্গ কিলোমিটার হয়েছে।
নতুন এ বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের বছর থেকে ৩১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি। সরকারি অনুদান ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিলো ৫৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সরকারি বিশেষ অনুদান ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর সরকারি অথবা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৭০৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এবার ব্যয়ের ক্ষেত্রে শতাংশের হিসাবে বরাদ্দ সব থেকে বেশি বাড়ানো হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাক ও মোটরসাইকেল এবং সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন খাতে। এ দুটি খাতেই বরাদ্দ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৯শ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। মৌলিক নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে অন্য যেসব খাতে ডিএনসিসি বরাদ্দ রেখেছে তার মধ্যেÑপ্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা খাতের ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ধরা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। কল্যাণমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিলো ১১ কোটি টাকা।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একইভাবে আশকোনো, কসাইবাড়িতে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া গঠিত ত্রিপক্ষীয় কমিটি নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার্যপরিধির আওতা বহির্ভূত হলেও জনস্বার্থে কালশি খাল, বাইশটেকি খাল এবং সর্বশেষ কল্যাণপুর খাল ডিএনসিসি’র উদ্যোগ পরিস্কার করা হয়েছে।
এছাড়া নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৬ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিলো ৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বর্জ্য বিভাগের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিলো ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান