২৪ শতাংশ কমে দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের হার নিম্নমুখী
ফাতেমা আহমেদ : আগস্টে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী ভর্তি হলেও সেপ্টেম্বরে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৩৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৭৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যা আগের দিনের চেয়ে ২৪ শতাংশ কম। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৭৯৩ জন। ইউএনবি, সারাবাংলা, রাইজিংবিডি ও জাগোনিউজ
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ৭১৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক হাজার ৭২৮ জন। তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৫ হাজার ৭৫৩ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৭২ হাজার ১১৪ জন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ৯৫ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এছাড়া বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিন হাজার ৪৪৭ জন রোগী। আর বাকি ১৯২ জনের মৃত্যু হলেও এদের মধ্যে ৫৭ জন ডেঙ্গুজনিত কারণে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ‘২০১৯ সালে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে সম্ভাব্য ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯২টি মৃত্যুর ঘটনা এসেছে। এর মধ্যে পর্যালোচনা কমিটি ৯৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করেছে। তার মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ৩৩ জন, এসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৫ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে দুইজন এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও বিএসএমএমইউতে ১৬ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে তিনজন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঁচজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নতুনভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন রোগী। এর পাশাপাশি ঢাকা বিভাগের জেলা শহরগুলোতে ৭৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৭ জন ও খুলনা বিভাগে ১১৫ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৩ জন, সিলেট বিভাগে ১১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এখন পর্যন্ত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯২টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সংস্থাটি ৯৬টি ঘটনার পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ৫৭টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রুবায়া আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার কয়রা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে এবং স্থানীয় রুপসা ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী। মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার দুপুরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত