ইলেকট্রিক বাস চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বললেন সাঈদ খোকন
সুজিৎ নন্দী : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ‘আমরা যে সময়ে ঢাকায় গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কাজ করছি, ঠিক একই সময়ে উন্নত শহরগুলো আরও অ্যাডভান্স চিন্তা করছে। তারা পরিবেশ রক্ষায় অকটেন বা ডিজেলচালিত বাস পরিবর্তন করে ইলেকট্রিক বাস চালুর লক্ষ্যে কাজ করছে। তাদের কর্মপরিকল্পনা ৭ থেকে ১০ বছর মেয়াদি।’
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির প্রধান সাঈদ খোকন আরো বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যুতে আমাদের দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এমনকি পর্যাপ্ত সরবরাহের নেটওয়ার্ক না থাকায় আমাদের বেশ কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে। আমরা যদি এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারি, তাহলে একদিকে বিদ্যুতের যে দাম রয়েছে, সেটা কমিয়ে আনা সম্ভব এবং বাড়তি বিদ্যুৎ বা যেটা অপচয় হচ্ছে- তা দিয়ে ঢাকা শহরে ইলেকট্রিক বাস কিংবা ইলেকট্রিক মোটরগাড়ি চালু করতে করতে পারি। এর সম্ভাব্যতা যদি আপনারা যাচাই করেন, তবে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এছাড়া তেল ও ডিজেলের কারণে যে কার্বণ দূষণ হয়, সেটার হারও অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে।’
গতকাল শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে ‘গণপরিবহনে শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
আইইবি অডিটোরিয়ামে সেমিনারে মেয়র বলেন, ‘পরিবেশ দূষণের কারণে জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা রয়েছে, সেখান থেকে বেশ কিছু ফান্ডও আমরা পেতে পারি। এটার অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ইতিবাচক বলে আমি মনে করি। সংশ্লিষ্ট দাতাদের বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তারা এর সম্ভাব্যতা ভেবে দেখবেন।’
আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুস সবুরের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক, পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খানসহ নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের নেতারা।
মেয়র খোকন বলেন, ‘বাসযোগ্য শহরগুলোকে নিয়ে যে জরিপ প্রকাশ করা হয় সেখানে দেখা যায় কখনও ঢাকা ১৪২তম, কখনও ১৩৯তম। বর্তমানে এটা ১৩৭তম। অর্থাৎ বসবাসের অযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকা ১৪২টি শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। একই তালিকায় আমরা যখন দেখি, সেখানে কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহর পরপর সাতবার বাসযোগ্য শহরের প্রথম স্থানে ছিল। আমরা গত দুই বছর ধরে দেখছি, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহর বাসযোগ্য শহরের সর্বপ্রথমে রয়েছে। কথাগুলো এজন্য বলছি- যখন আমরা ভিয়েনা বা মেলবোর্নের কথা বলি, তখন আমরা বলি বাসযোগ্য শহরের শীর্ষে অবস্থান করছে। আর যখন ঢাকার কথা বলি তখন বলি, বসবাসের অযোগ্য শহরের তৃতীয় কিংবা পঞ্চম স্থান। একই জরিপে কেউ প্রথমে আছে, কেউ শেষে আছে। তাহলে আমরা এটাকে এভাবে বলি না কেন- ভিয়েনা শহর বসবাসের অযোগ্য শহরের ১৪২তম অবস্থানে রয়েছে। ঢাকার কথা যখন বলি, তখন বলি বসবাসের অযোগ্য শহরের শেষে রয়েছে।’
মেয়র বলেন, ‘পৃথিবীতে কমপক্ষে ৫০ লাখ শহর, উপশহর রয়েছে। আমরা এভাবেও বলতে পারি- এই শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা শহর ১৪২তম। এই যে প্রচারণা, এটার কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সারাবিশ্বে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আজ বিশ্বকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্নভাবে দেখার উপায় নেই।’ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়