জয়ের পথে আফগানিস্তান, বৃষ্টি হলেই কেবল মান রক্ষা সাকিবদের
এল আর বাদল : তোমরা ঘুমিও না, জেগে থাকো, তোমাদের জন্য পরাজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান একমাত্র টেস্টের গতকাল চতুর্থ দিন শেষে সাকিব-মুশফিকদের উদ্দেশে উপরোক্ত মন্তব্য করেন ক্রিকেট ভক্ত সোহেল রানা। পান্থপথের একটি হোটেলে বসে চার বন্ধু চা পান করছেন আর বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে ঝাঁঝাঁলো মন্তব্য করছিলেন। নাম জিজ্ঞেস করতেই বললেন, আমি সোহেল রানা, ড্যাফোডিল ইউনিভারসিটির ছাত্র। এই প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে রানা আরও উত্তেজিত হয়ে বললেন, লিখেন ভাই-টেস্টে নবীন দলের বিরুদ্ধে ২০ বছরের অভিজ্ঞ বাংলাদেশের করুণ দশা। লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায় আমাদের। সোহেল রানা এও বললেন, চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের কী পরিণতি হবে, সেটা বুঝতে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু সোহেল রানা নয়, গোটা দেশজুড়েই ফুঁসে আছে ক্রিকেটপ্রেমিরা। দুটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে আসা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে সাকিব-মুশফিকরা ব্যাটিং ব্যর্থতার করুণ চিত্রই মঞ্চস্ত করেছেন। তারপরেও জয়ের লক্ষ্য ছিলো সাকিবের মধ্যে। কিন্তু ইতিহাস তো বলছে ৩৯৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে কখনই জেতেননি বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ার রেকর্ড ২১৫। জিততে হলে তাই ইতিহাস গড়তে হবে সাকিব সেনাদের। বাকি একদিনে করে দেখাতে হবে অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়, অবর্ণনীয় কিছু।
তবে ব্যাটসম্যানরা যেভাবে খেলছেন, তাতে রেকর্ড তো দূরের কথা, দ্রুত হারের শংকা জেঁকে বসেছে কাঁধে। তবে এরই মধ্যে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বৃষ্টি। যে কারণে গতকাল চতুর্থ দিনের খেলা বেশ আগেভাগেই শেষ হয়। আজ পঞ্চম ও শেষ দিন প্রায় আধা ঘণ্টা আগে খেলা শুরু হবে।
এখন পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৩৫ রান করেছে বাংলাদেশ। এখনো দরকার ২৬২ রান। এ অবস্থায় স্বাগতিকদের বাঁচাতে পারে একমাত্র বৃষ্টি। কারণ, আজ থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সাকিব আল হাসান ৩৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে আছেন। সঙ্গে থাকা সৌম্য সরকার এখনো রানের খাতা খুলতে পারেননি।
তবে বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি বাংলাদেশ। সাদমানের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে দেখেশুনে খেলেন লিটন দাস। লাঞ্চ পর্যন্ত অনায়াসে কাটিয়ে দেন তারা। ফিরেই বিপদে পড়েন এ জুটি। জহির খানের দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন লিটন। প্রথম ইনিংসে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে প্রমোশন পান মোসাদ্দেক হোসেন। তবে ওয়ানডাউনে নেমে উল্টো দলকে বিপাকে ফেলেন তিনি। অযাচিত শট খেলতে গিয়ে জহিরের দ্বিতীয় শিকার হন মোসাদ্দেক।
এরপর আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের চমক। বিষাক্ত লেগ স্পিনের ঘূর্ণিতে দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম (২৩) ও মুমিনুল হককে ঘায়েল করেন তিনি। মূলত সেখানেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
সিনিয়র সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে ছিলেন সাদমান ইসলাম। দেখেশুনে খেলেন তিনি। তবে হঠাৎই কক্ষপথ হারিয়ে ফেলেন বাঁহাতি ওপেনার। তিনিও পড়েন আফগানদের পাতা ঘূর্ণি ফাঁদে। মোহাম্মদ নবীর বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ বিফোর হন তরুণ ব্যাটার। এতে ৪ চারে ৪১ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসটির ইতি ঘটে।
দলের চরম বিপর্যয়ে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ঘূর্ণি ভেলকিতে তাকেও বোকা বানান রশিদ খান। আফগান অধিনায়ককে ডিফেন্স করতে গিয়ে শর্ট লেগে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান