ধানের কুঁড়ার তেলই মেটাতে পারে চাহিদার ৫০ ভাগ
মতিনুজ্জামান মিটু : ক্যান্সার প্রতিরোধক গামা ওরাইজেনল সমৃদ্ধ কুঁড়ার তেলে রয়েছে শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন ও ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মাপকাঠিতে ধানের কুঁড়ার তেলে (রাইস ব্রান অয়েল) স্যাচুরেটেড, মনো আনস্যাচুরেটেড এবং পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের সমতা অন্যান্য তেলের চেয়ে সবচেয়ে বেশি থাকে।
ধানের তুষ ছাড়ানোর পর চালের গায়ে বাদামি যে অংশ থাকে, সেখান থেকে এই তেল নিষ্কাশন করা হয়। এই তেল কার্ডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধ করে। স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় ধানের কুঁড়া থেকে তৈরি ভোজ্যতেলের চাহিদা দেশে ক্রমেই বাড়ছে। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি মানুষ এখন এই তেলের দিকে ঝুঁকছেন। ভারত সরকার প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে কুঁড়ার তেল আমদানি উৎসাহিত করতে আমদানি শুল্ক তুলে দিয়েছে। প্রধান ভোজ্যতেল হওয়ায় জাপানেও এ তেল আমদানির চাহিদা রয়েছে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে উৎপাদিত কুঁড়ার তেল বিশ্ববাজারে সম্ভাবনাময় বলে বিবেচিত হচ্ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ দেশ থেকে কুঁড়ার ২০ হাজার টন তেল রপ্তানি হয়েছে প্রধানত ভারতসহ বিভিন্ন দেশে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানালেন, প্রতি বছর দেশের অটো, সেমি অটো ও সাধারণ রাইস মিলে ১৫ লাখ মেট্রিক টন থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন ধানের কুুড়া উৎপাদন হয়। এর মধ্যে রাইস ব্রান অয়েল মিলগুলো তেল তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে কাজে লাগাতে পারে প্রায় সোয়া দুই লাখ মেট্রিক টন কুঁড়া। বাকি ১৪ লাখ থেকে ১৫ লাখ মেট্রিক টন কুঁড়া নষ্ট হয়ে যায়। একে কাজে লাগানো গেলে চালের কুঁড়ার তেল দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদার ৫০ ভাগ পূরণ করতে পারবে।
এদিকে অপার এই সম্ভাবনার কারণেই কুঁড়ার তেল উৎপাদনকারীরা তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াচ্ছে এবং নতুন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে। বছরে এ তেলের চাহিদা বাড়ছে শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ। বর্তমানে সুপার শপসহ বেশির ভাগ দোকানেই সয়াবিন ও পাম তেলের পাশাপাশি ধানের কুঁড়ার তেল বিক্রি হচ্ছে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান