আবুধাবিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকায় বানানো মসজিদ
মোহাম্মদ রকিব : সংযুক্ত আরব আমিরাতে বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন মসজিদ রয়েছে। মনোমুগ্ধকর এসব মসজিদ দেখতে বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভিড় করেন। এর মধ্যে চোখধাঁধানো আবুধাবির শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদ। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
শ্বেত মার্বেলে নির্মিত শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ আমিরাতের সর্ববৃহৎ ও পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ। আমিরাতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নামানুসারে এর নামকরণ হয়েছে। মসজিদের পাশেই তার সমাধি।
মসজিদটির নকশা করেছেন সিরিয়ার স্থপতি ইউসুফ আবদেলকি। ১৯৯৬ সালে ৩০ একর জায়গায় এর নির্মাণকাজ শুরুর পর শেষ হয় ২০০৭-এ। এজন্য খরচ হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। পারস্য, মোগল ও আলেকজান্দ্রিয়া মসজিদের স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে গড়া হয়েছে এটি। কেন্দ্রীয় চত্বরের নকশা মরক্কোর বাদশা দ্বিতীয় হাসান মসজিদ ও পাকিস্তানের বাদশাহি মসজিদের শৈলীতে অনুপ্রাণিত।
মসজিদটির দৈর্ঘ ৪২০ মিটার, প্রস্থ ২৯০ মিটার। এতে ছোটবড় সাত আকারের ৮২টি গম্বুজ ও ১০৭ মিটার উঁচু চারটি মিনার রয়েছে। মিনারগুলোর নিচের ভাগ মিসরীয় মামলুক ধারার চৌকো আকৃতির, মধ্যভাগ উত্তর আফ্্িরকার ফাতিমি আমলের ষড়ভুজ আকৃতির এবং ওপরের ভাগ তুরস্কের উসমানীয় আমলের গোলাকৃতির।
আলোকিত মসজিদটিতে রয়েছে ইরান থেকে আনা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ কার্পেট (৬০ হাজার ৫৭০ বর্গফুট) ও সর্ববৃহৎ রঙিন ঝাড়বাতি (১০ মিটার ব্যাস ও ১৫ মিটার উঁচু)। পুরো মেঝেতে ১৭ হাজার বর্গমিটারের চোখধাঁধানো মার্বেল মোজাইকের কারুকাজ। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চওড়া মার্বেল মোজাইক বলে স্বীকৃত। মসজিদের খুঁটি, দেয়াল, মেঝে, সিলিংসহ অভ্যন্তরীণ কারুকাজে ব্যবহার হয়েছে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা সোনা, মার্বেলসহ মূল্যবান পাথর।
একসঙ্গে ৪০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে। নারীদের জন্য রয়েছে নামাজের আলাদা ব্যবস্থা। এখানকার প্রার্থনাকক্ষ তিনটি। প্রধান প্রার্থনাকক্ষ ছাড়া বাকি দুটি কক্ষ ছোট আকারের। এর মধ্যে একটি কক্ষ নারীদের জন্য। এগুলোতে ২৪ ঘণ্টা কোরআন তেলওয়াত হয়।
মসজিদের শৌচাগার ও ওজুখানা অত্যাধুনিক। ওজুখানায় রয়েছে গরম ও ঠা-া পানির ব্যবস্থা। বাইরে চারদিকে ফোয়ারা, ফুল ও খেজুরসহ বিভিন্ন গাছের সারিতে মনোরম পরিবেশ। সবুজের সমারোহে ঘেরা গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গার পাশাপাশি বেজমেন্টেও গাড়ি রাখা যায়। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান