হঠাৎ করেই বাড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যুগপোযোগী আইন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
এস এম নূর মোহাম্মদ : কোন উৎসব সামনে আসলে হঠাৎ করেই কোন বিশেষ পণ্যের দাম বেড়ে যায়। আবার কোন কারণ ছাড়াই বেড়ে যায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আর দাম স্বাভাবিক করতে খোলা বাজারে ওই পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নেয় টিসিবি। তবে তাতে তেমন কোন প্রভাব পড়েনা বাজারে। অভিযোগ রয়েছে, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মাঝে মধ্যে অসাধু উপায়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় অতি মুনাফার লোভে।
সম্প্রতি পেঁয়াজের মূল্য হঠাৎ করেই দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সুযোগ সন্ধানি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক সেলে পেঁয়াজের পরিমাণ বাড়ানো হবে। তবে পেঁয়াজ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের হঠাৎ অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে যুগপযোগী আইন করার তাগিদ দিয়েছেন আইনজ্ঞরা। তারা বলেন, এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে সঠিক আইন না থাকার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে এখনি সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যাতে হঠাৎ করে না বাড়াতে পারে সে বিষয়ে এখনো কোন আইন নেই। এটার ওপর নিয়ন্ত্রণও নেই। নিয়ন্ত্রণ হলে এমনটা হতো না। আর ট্রাকে করে স্বল্প মূল্যে মাঝে মধ্যে কিছু পণ্য বিক্রি করলেও তা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে যুগপযোগী আইন করার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং এর ওপর জোড় দেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়টি মনিটর করতে পারে। প্রতিটি বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি থাকতে হবে। তবে এ বিষয়ে যুগপোযোগী আইন করার পরামর্শ দেন এই আইনজীবী।
গত ঈদুল আযহার আগে সিন্ডিকেট করে অনৈতিক ও বেআইনিভাবে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। কনসাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে এই রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আব্দুল মোমিন। যারা অবৈধভাবে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছিল রিটে। তবে বিষয়টি শুনতে অপারগাত প্রকাশ করেছিলেন একটি বেঞ্চ।
জানতে চাইলে আইনজীবী মোমিন বলেন, দ্যা কন্ট্রোল অফ এসেনশিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর ৩ (১) ধারায় সরকারকে এ বিষয়ে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে সরকার প্রয়োজনে যে কোন নিত্য পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিতে পারবে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর একটি মনিটরিং সেলও গঠন করেছে। কিন্তু কার্যত ওই সেল কোন কাজই করছেনা। আইনে তাদের যে ক্ষমতা দেয়া আছে তারা সেটা প্রয়োগ করলে এ সমস্যা হতো না।
তিনি বলেন, যে কোন উৎসবের আগে বিশেষ পণ্য গুলোর দাম নির্ধারণ করে দিলে হঠাৎ করেই তা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবেনা। আর একটি বেঞ্চ আমাদের রিট আবেদনটি শুনতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। তাই অবকাশের পর ১৩ অক্টোবর আমরা নতুন বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য উপস্থাপন করবো। সম্পাদনা : ইকবাল খান