ব্যবসা সহজ করার সংস্কারে বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ
বিশ্বজিৎ দত্ত : বিশ্বের যেসব দেশ ব্যবসাকে সহজ করার জন্য সংস্কারের কাজ করেছে বাংলাদেশ সেইসব সংস্কার করা ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, জেনে আনন্দ হলো যে সব দেশ ইজি অফ ডুয়িং বিজনেস উন্নত করার জন্য সংস্কার করেছে তাদের ১০টিদেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। এ বিষয়ে তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশ কততম স্থানে রয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা শিঘ্রই প্রকাশ করবে বিশ্বব্যাংক।
গত শুক্রবার বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে সহজ ব্যবসা করার সূচক বা ইজি অফ ডুয়িং বিজনেস তালিকায় শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, আগামী ২৪ অক্টোবর এ প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গরূপে প্রকাশ করবে বিশ্বব্যাংক।
ব্যবসা সূচকে উন্নতি করার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গত কয়েকবছর ধরে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশ এ সূচকে এখন ১৯০ দেশের মধ্যে ১৭৬তম। এবার বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই অবস্থানের উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করার জন্য সরকার যে কাজ করছে তাতে আগামী রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নত হয়ে ১২০ থেকে ২৫ এরমধ্যে থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, কোন দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়মকানুন ও তার বাস্তবায়ন কতটুকু সহজ বা কঠিন তার ওপর বিশ্বব্যাংক এ তালিকা তৈরি করে।বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত তালিকার ২০টি দেশের তালিকায় রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, জিবুতি, জর্ডান, কেনিয়া, কসোভো, কুয়েত, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, কাতার, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, টোগো, উজবেকিস্তান ও জিম্বাবুয়ে। তবে কোন দেশ কতটা বেশি উন্নতি করেছে তা প্রকাশ করেনি বিশ্বব্যাংক।মূলত ১০টি নির্দেশকের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক ডুয়িং বিজনেসের র্যাঙ্কিং বা ক্রমতালিকা তৈরি করে। এগুলো হলো ব্যবসা শুরুর অনুমোদন, ভবন নির্মাণের অনুমতি, বিদ্যুৎ সংযোগ, ভূমি নিবন্ধন, ঋণপ্রাপ্তি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তির বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া। এসব প্রক্রিয়ায় জটিলতা, ব্যয় বেশি হওয়া ও দীর্ঘসূত্রতা একটি দেশের পিছিয়ে থাকার কারণ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয় উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা প্রক্রিয়াকে সহজ করতে বেশ কিছু সংস্কার করেছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া ও ঋণপ্রাপ্তির দিক দিয়ে উন্নতি করেছে। নতুন কোম্পানি নিবন্ধনে বাংলাদেশ খরচ কমিয়েছে। ডিজিটাল সনদে ফি বা মাশুল কমানো হয়েছে।
ঢাকায় নতুন সংযোগের জন্য নিরাপত্তা জামানতের পরিমাণ অর্ধেক করেছে বিদুৎ সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো জনবল নিয়োগ ও ডিজিটালাইজেশনের জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। বৈদ্যুতিক পরামর্শক ও প্রধান প্রধান বৈদ্যুতিক পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্স নিতে সময়ও আগের তুলনায় কমে এসেছে। এছাড়া ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিয়েছে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি)। যে কোনো অংকের ঋণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের রেকর্ড ও ডাটা সিআইবির আওতায় এসেছে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করতে ২০১৬ সাল থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।