বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখায় সম্রাটের ৬ মাসের কারাদন্ড
ইসমাঈল ইমু : ক্যাসিনো বাণিজ্যে বিতর্কিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে ৬ মাসের কারাদ- দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি বাড়ি থেকে স¤্রাটকে আটকের পর দুপুর থেকে তার কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় সেখান থেকে দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, অবৈধ মাদকদ্রব্য ও টর্চার করার ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়। পরে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণীর চামড়া সংরক্ষণের অপরাধে ৬ মাসের কারাদ- দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।
বেলা দেড়টার দিকে হেলমেট পরিহিত স¤্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূঁইয়া টাওয়ারে ঢুকতে দেখা যায় র্যাব সদস্যদের। এ সময় র্যাব সদস্যরা ওই ভবনের সামনে অবস্থান নেন, ভবনের প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেইট আটকে দেয়া হয়। র্যাবের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও কাকরাইলের রাজমনি ঈশা খাঁ হোটেলের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। ভূঁইয়া ম্যানশনের নিচতলার সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। চারপাশে ভিড় করে উৎসুক জনতা। ওই ভবনের সামনে দুই পিলারের একটিতে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, অন্যটিতে সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের ছবি রয়েছে। হারুনের ছবির নিচেই রয়েছে ইসমাইল হোসেন স¤্রাটের হাস্যোজ্জ্বল ছবি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনায় ছিল যুবলীগ নেতা স¤্রাটের নাম। ওইদিন যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর সেখানে ছিলেন স¤্রাট। কিন্তু এরপর তিনি নিরুদ্দেশ হন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন তারা। এ দুই যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন র্যাব কর্মকর্তারা। পরে তাদের নিয়ে আসা হয় ঢাকায়।
স¤্রাটের শান্তিনগর ও মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। শান্তিনগরের ওই বাসায় তার ভাই মো. বাদল থাকেন। মহাখালীর বাসায় থাকেন স¤্রাটের প্রথম স্ত্রী। স¤্রাটের বাসায় অভিযান চালানোর পাশাপাশি মিরপুর ২ এ আরমানের বাসায়ও অভিযান চালায় র্যাব ৪। ব্লক-ই এর ৩/৬ নম্বর বাসায় রোববার দুপুরে অভিযান শুরু হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইয়ংমেনস ফকিরেরপুল ক্লাবে অভিযান এবং যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর সেখানে ছিলেন সম্রাট। কয়েক দিন পর তিনি নিরুদ্দেশ হন।
ওইদিন র্যাবের অভিযানের সময় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের ভেতরে সম্রাটের বিশাল ছবি দেখা যায়। ওই ক্লাবের ক্যাসিনো তিনিই চালাতেন এবং মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় অন্য ক্যাসিনোগুলো থেকেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তার কাছে যেত বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। সম্রাটের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা আরমানও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনোর কারবারে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তিনি সিনেমাতেও টাকা খাটাচ্ছিলেন। আরমানের প্রোডাকশন হাউস ‘দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়া’র ব্যানারে প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পায় গত কোরবানির ঈদে। ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ নামের ওই সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও বুবলী। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান