আমাদের বিশ্ব • আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
প্রবৃদ্ধি বাড়বে সেবা খাতে কমবে কৃষি ও শিল্পে, জানালো বিশ্বব্যাংক
মেরাজ মেভিজ : মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার সঙ্গে একমত নয় বিশ্বব্যাংক। এমনকি নিজেদের প্রকাশিত জুনের প্রতিবেদনের চেয়েও প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা এ সংস্থাটি।
গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছে তা থেকে শতাংশ পয়েন্ট কম অর্জিত হবে। অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন হবে বলা হলেও বিশ্বব্যাংকের হিসাবে তা দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২ শতাংশে। এর আগে জুনে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের বৈশ্বিক অর্থনীতির হালনাগাদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশের কথা বলা জানিয়েছিলো। অর্থাৎ মাস তিনেক আগের সেই প্রতিবেদন থেকেও দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
আশ্চর্য হলেও সত্য সম্প্রতি প্রকাশিত তিন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তিন ধরনের প্রবৃদ্ধির তথ্য। কারণ এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলো। দুটি সংস্থাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসসহ সরকারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট, অক্টোবর ২০১৯’ শীর্ষক হালনাগাদ এ প্রতিবেদন প্রকাশ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, প্রবৃদ্ধির সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়। টেকসই প্রবৃদ্ধির গতিধারাই মূল বিষয়।
এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে তিনি বেশ কিছু পরামর্শ দেন। তার ভাষায়, প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। বাজার চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড হ্যাভেনও সংস্কার প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, আর্থিক, রাজস্ব, উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংস্কার দরকার। এ ছাড়া ব্যবসার পরিবেশ উন্নতি করার তাগিদও রয়েছে। আশার কথা লক্ষ্যমাত্রায় না হলেও রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ে জোরালো প্রবৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের উপর ভর করে সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের আপডেট রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধির মধ্যে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছর সরকারি হিসেবে হয়েছিলো ৩.৫ শতাংশ। এছাড়া শিল্পখাতেও প্রবৃদ্ধির কমে দাঁড়াবে ৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিলো ১৩ শতাংশ। তবে বড় শতাংশের প্রবৃদ্ধি বাড়বে সেবাখাতে। যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ শতাংশে। গত অর্থবছরে যা ছিলো ৬.৫ পাঁচ শতাংশ।
ব্যাংক খাত সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই খাতটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেয়া হয়, তা ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এতে সরকারি ব্যাংকগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের গ্যারান্টি দেয়ার কারণে ঋণপত্র খোলায় খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান