মোসলেমা নাজনীন : ছোট্ট ঘর, পরিপাটি সংসার। দেখলেই মনে হবে বিধাতা কোন কিছুই অপূর্ণ
রাখেননি এ সংসারের কোথাও। তিথির হ্যাজবেন্ড একটি স্বনামধন্য এনজিওতে কাজ
করেন। তিথি তেমন কিছুই করেনা কিন্তু দু-বাচ্চাসহ সংসারকে সুন্দরকরে আগলে
রেখেছে। তিথি বেশ পরিপাটি, মার্জিত, চটপটে এবং আধুনিকমনা।
প্রতি সকালে তিথি তার স্বামীকে অফিসে বিদায় করে বড় বাচ্চাটিকে নিয়ে স্কুলে
আসে। স্কুল থেকে বাসায় আসতে ৪০ মিনিট সময় লাগে। তার বাচ্চাটি যেহেতু প্লে-
গ্রুপে পড়ে সেহেতু তার স্কুল হল সর্বমোট ২ ঘন্টা। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।
বাসায় আসা যাওয়ার ঝামেলা এড়ানোর জন্য তিথি অন্য বাচ্চাদের মায়ের সাথে
স্কুলের সামনে বসে খোশগল্প করে এবং স্কুল ছুটি হলে পরে বাচ্চাকে নিয়ে বাসায়
ফেরে।
যতদিন যেতে থেকে ততই তিথির ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে অন্যান্য ছাত্রদের
মায়েদের সাথে। আস্তে আস্তে তারা অবসরে বাচ্চাদেরকে রেখে মার্কেটে ঘুরতে যাওয়া,
একসাথে মিলে ফুচকা চটপটি খাওয়া, পার্কে খানিকক্ষন হাটতে যাওয়া ইত্যাদিতে
অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
শুক্রবার হলে তিথি পরিবারের সদস্যদের জন্য স্পেশাল রান্না করে, পরিবারের
সবাই মিলে ঘুরতে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে তার কি যে হল! সে বায়না ধরলো এ
শুক্রবার সে তার বান্ধবীর সাথে বৈঠকে যাবে। তার হ্যাজবেন্ড জিঞ্জাসা করলো বৈঠক
কি? সে বললো এখানে অনেকে মিলিত হয়, বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান
নিয়ে আলোচনা হয়। তার হ্যাজবেন্ড এগুলো শুনে তাকে আর বারন করলো না।
কিন্তু আস্তে আস্তে এ জিনিস তাকে নেশাগ্রস্থ করে ফেলল।
সে তার পরিবারের সদস্যদেরকেও এ পথে আসার জন্য উৎসাহ দেয়া শুর
করে। হঠাৎ করেই তার বেশভূষার পরিবর্তন হতে লাগল। তিথি এখন মাথায় হিজাব
পড়ে। কারো সাথে দেখা করতে ইতস্ত:ত করে। তার হ্যাজবেন্ডও তিথির দ্বারা
মোটিভেটেড হয়। হঠাৎ করেই জ্বলজ্বলে তারাগুলো ম্রিয়মান হতে থাকে।।