জিয়ারুল হক : ৭৪ বছর বয়সী বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিল্পী কালিদাস কর্মকারকে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে ইস্কাটনের বাসায় অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান গ্যালারি কসমসের নির্বাহী ব্যবস্থাপক চিত্রশিল্পী সৌরভ চৌধুরী। বিডিনিউজ, রাইজিংবিডি, বার্তা ২৪
চিত্রশিল্পী সৌরভ চৌধুরী বলেন, ‘কালিদাস কর্মকারকে দুপুর দেড়টার দিকে বাথরুমে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে মরদেহ বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
তিনি বলেন, বরেণ্য চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারের শেষ শ্রদ্ধানুষ্ঠান হবে আগামী রোববার (২০ অক্টোবর)। তবে তার শেষকৃত্য কোথায় হবে, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
শিল্পীর পরিবারের পক্ষে গ্যালারি কসমসের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর সৌরভ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে কালিদাস কর্মকারের মরদেহ রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রয়েছে। সেখান থেকে রোববার সকাল ১০টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার শিক্ষাক্ষেত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে।
‘সেখানে শিল্পী, চারুশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল ১১টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় তার নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।’ কালিদাস কর্মকারের দুই মেয়ে কেয়া কর্মকার ও কঙ্কা কর্মকার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তারা আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
নিরীক্ষাপ্রবণতার জন্য বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকার। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত ফরিদপুরে তার জন্ম হয়। শৈশবেই তিনি আকতে শুরু করেন। স্কুল জীবন শেষে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব আর্টস থেকে ১৯৬৩-৬৪ সালে চিত্রকলায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে কলকাতার গভর্নমেন্ট কলেজ অব ফাইন আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফট থেকে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান নিয়ে চারুকলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। জীবদ্দশায় একুশে পদক, শিল্পকলা পদকসহ অসংখ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন বরেণ্য এই চিত্রশিল্পী।
খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার এক শোকবার্তায় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই চিত্রশিল্পী তার চিত্রকর্মে আবহমান বাংলার স্বরূপ প্রকাশের পাশাপাশি নিরীক্ষাধর্মী শিল্পকর্মের জন্য শিল্পীমহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছেন। তার কর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এছাড়া কালিদাস কর্মকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।