পঞ্চগড়ে একমাসের কন্যাশিশুকে রাস্তায় ফেলে পালালেন মা
প্রবাল চৌধুরী : জেলা শহরের কামাতপাড়া মহল্লার একটি গলি থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সিরাজউদ্দোলা পলিন জানান, শিশুটি শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চগড় সদরের অমরখানার ভিতরগর এলাকার গৃহবধূ রিমু আক্তার দুই বছর আগে পরকীয়ায় জড়িয়ে পার্বতীপুরের এক ট্রাকচালকের হাত ধরে পলিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি নানাবাড়ি জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকায় এসে পেয়ারা বেগম নামে আরেক গৃহবধূকে তার একমাস বয়সী কন্যাকে দত্তক নিতে বলেন। এতে পেয়ারা বেগম অস্বীকৃতি জানালে রাস্তায় শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যান রিমু আক্তার। রাতে পরিত্যক্ত অবস্থায় শিশুটিকে পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়।
খবর পেয়ে রাতেই জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। এ সময় পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন শিশুটিকে কোলে তুলে নেন।
পরে তারা কামাতপাাড়া মহল্লার পেয়ারা বেগমসহ শিশুটির নানাবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শিশুটির মায়ের খোঁজ করেন। তবে রাতে শিশুটির মায়ের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ। পরিত্যক্ত অবস্থায় শিশু উদ্ধারের খবরে শিশুটিকে দত্তক নিতে ভিড় করছেন হাসপাতালে।
শিশুটির মা রিমু আক্তারের মামা মো. মুক্তা বলেন, প্রায় দুই বছর আগে স্বামী-সংসার রেখে দিনাজপুরের পার্বতীপুর এলাকার এক ট্রাকচালকের হাত ধরে পালিয়ে যায় রিমু আক্তার। এরপর আমরা আর তার কোনো খোঁজ করিনি। শুনেছি বৃহস্পতিবার সে সন্তানসহ আমাদের বাসায় এসেছিল। আমি তখন বাসায় ছিলাম না। পরে শুনছি কোলের শিশুটিকে রেখে সে নাকি পালিয়ে গেছে। আমরাও তার খোঁজ করছি। কিন্তু বর্তমানে সে কোথায় আছে আমরা জানি না।
পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, শিশুটিকে বর্তমানে হাসপাতালেই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। আমরা শিশুটির পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, কোনো মা যদি নিরাপত্তার অভাবে শিশুটিকে এভাবে রেখে যান তবে তা খুবই দুঃজনক। আমরা সবাই মিলে এই দায়িত্ব পালন করবো। এটা রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান