মতিনুজ্জামান মিটু : কৃষি শুমারি ২০১৯ এর প্রাথমিক রিপোর্টে খামারের গবাদিপশুর তথ্য উঠে আসেনি। এই তথ্য আসলে রিপোর্টে গরু ছাগলের ফিগার অন্যরকম হতে পারতো বললেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক।
তিনি বলেন, কমেনি বরং অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে দেশে প্রচুর সংখ্যায় বেড়েছে ছাগল। বিবিএসকে বলবো কোনো ভুল হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখার জন্য।
সমন্বয়হীনতার অভাবে এমনটি হয়েছে বলবো না, কারণ শুমারির একক দায়িত্ব বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর। ভাল মন্দের দায় প্রধানত ওই প্রতিষ্ঠানের ওপরই বর্তায়। এছাড়া জরিপ দলের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে থাকেন। ‘দেশে ছাগল কমেছে, বেড়েছে গরু’ ঠিক কিনা জানতে চাইলে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অর্থনীতি শাখার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফয়সাল মেহেদি হাসান বলেন, কোনোটাই কমেনি। আগের চেয়ে গরু, মহিষ, ভেড়া, মুরগী, হাঁস সবকিছু বেড়েছে।
হাউসহোল্ড সার্ভে হওয়াতে, প্রাথমিক কৃষি শুমারি রিপোর্টে প্রকৃত প্রতিফলন আসেনি। প্রাতিষ্ঠানিক জরিপ বা শুমারি হলে ২০২০ এর মধ্যে প্রকৃত তথ্য বা ডাটা পাওয়া যেতে পারে। ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ‘অল ইন অল আউট’ হওয়াতে জরিপ যদি অল আউট প্লেসে হয় তখন প্রকৃত ডাটা আসবেনা। তার জন্য বছর শেষে প্রকৃত ডাটা পাওয়ার সম্ভাবনা বা একিভূত তথ্য পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে প্রান্তিক কৃষক বা খামারি প্রকৃত তথ্য দিতে চায়না। কারণ তারা মনে করে প্রকৃত তথ্য দিলে তাদেরকে ট্যাক্স দিতে হবে। ফলে, গ্রামীণ পর্যায় থেকে প্রকৃত তথ্য আসছে না। মহিষ, ছাগল, ভেড়া এবং হাঁস-মুরগির ক্ষেত্রে প্রকৃত ডাটা পেতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক শুমারি প্রয়োজন।
বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ দেশীয় গবাদি পশু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যার প্রতিফলন, ঈদ-উল- আযহায় দেশীয় গবাদিপশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা পূরণ হয়েছে। সর্বশেষে কৃষি শুমারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যেমন টিকা প্রদান, গবাদিপশু উন্নয়ন, গো-খাদ্যের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
প্রাণিজ আমিষ (দুধ, মাংস ও ডিম) এর উৎপাদন এর সঠিক সংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে বিবিএস কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহযোগিতার মাধ্যমে।
ফলশ্রুতিতে জেলা অনুযায়ী উৎপাদন ও কনজাম্পশন নিশ্চিত করা যাবে। পণ্য বহুমুখীকরণও নিশ্চিত করা সম্ভবপর হবে। খামারীরা এতে অর্থিকভাবে লাভবান হবেন, সেই সঙ্গে সকলের জন্য প্রয়োজনীয় আমিষ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব