নূর মাজিদ : ২০২১ সাল নাগাদ মহাদেশটির সকল দেশের সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রবৃদ্ধি অংক হবে এটি। এর সিংহভাগই বাড়ছে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশে। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সাল থেকেই এই খরচ বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে, কাজ করছে ইউরোপীয় মিত্রদের সামরিক খরচ বাড়ানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤েপর কূটনৈতিক চাপ। বড় কোন পরিবর্তন না আসলে খরচ কমার কোন সম্ভাবনা নেই, তবে ব্রেক্সিটের পর ইউরোপের অন্যতম প্রতিরক্ষা ব্যয়ের দেশ যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ড স্টারলিংয়ের মান দুর্বল হলে প্রতিরক্ষা ব্যয় অনুমানের চেয়ে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সিএনবিসি
একটি পর্যবেক্ষণ গবেষণার বরাতে পূর্বাভাসটি মূলত দিয়েছে আইএইচএস মার্কিটের প্রতিরক্ষা বাজার বিশে¬ষক জেনস ডিফেন্স ওয়েবসাইট। গতকাল শুক্রবারই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। ইউরোপে সামরিকখাতে ব্যয় এরপর পৃষ্ঠা ৭, সারি
(শেষ পৃষ্ঠার পর) বরাবরই একটি ¯পর্শকাতর ইস্যু। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রা¤প ইউরোপের নিরাপত্তায় মার্কিন ব্যয় হ্রাসের জন্য গত দুবছর ধরেই ইউরোপের ন্যাটো মিত্রদের প্রতিরক্ষা খরচ বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। তার দাবী, জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে আলোচিত খাতে। ২০১৭ সালের ন্যাটো সম্মেলনে প্রথম ট্রা¤প চাপ বৃদ্ধি করে বলেন, ইউরোপের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র একাই যা খরচ করছে তা সকল ন্যাটো মিত্রদের বরাদ্দের চাইতেও বেশি।
সাম্প্রতিক পূর্বাভাস নিয়ে আইএইচএস মার্কিটের প্রধান (প্রতিরক্ষা) বাজেট বিশে¬ষক ফ্যানেলা ম্যাকগার্টি বলেন, প্রতিরক্ষার জন্য এখন ইউরোপে দেখা যাচ্ছে বেশ বড় অংকের বরাদ্দ প্রবণতা। ট্রা¤েপর চাপ যে কাজে দিচ্ছে সেটাও নির্দেশ করে বর্তমান পরিস্থিতি। জেনসের অনুমান, ২০২১ সালে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় ছাড়াবে। একইসঙ্গে, চলতি বছরে সমগ্র ইউরোপের বার্ষিক বরাদ্দ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় সার্বিক ৫ শতাংশ আকারে বাড়বে। একক হিসেবে সবচাইতে বেশি বাড়ছে জার্মানির। ২০১৯ সালে দেশটি প্রতিরক্ষাখাতে ১১ শতাংশ বেশি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দ বৃদ্ধির হিসাবে এরপরেই আছে সুইডেন, দেশটির ব্যয় গতবছরের চাইতে ৯ শতাংশ বেড়েছে চলতি বছরের বাজেটে। পশ্চিম ইউরোপের বৃহৎ সামরিক শক্তি যেমন; ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের মোট বরাদ্দ সামগ্রিক গড়ে বেড়েছে ৪ শতাংশ। ডলারের অংকে পরিমাণে কম হলেও পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর নতুন সদস্য দেশগুলোর সামরিকখাতেও উলে¬খযোগ্য অর্থ দেয়া হচ্ছে। এসব দেশ চলতি বছর সার্বিক গড়ে বরাদ্দ বাড়িয়েছে ৯ শতাংশ।
এদিকে ইউরোপে সবচেয়ে বিদেশি উৎসের বড় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রেতা হলো যুক্তরাজ্য। আগামী ১০ বছরে দেশটি ১৮ হাজার ৬শ কোটি পাউন্ড (২৪ হাজার ১শ কোটি ডলার)-এর প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশই কেনা হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। জেনসের বিশেষজ্ঞদের মতে, পাউন্ড যদি আরও দুর্বল অবস্থানে নামে তবে এসব অস্ত্র কেনার প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা দেখা দেবে। এমনকি কমে যেতে পারে সার্বিক ক্রয়ের পরিমাণ। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব