৩ বছর পর কমলো বিলিওনিয়ারদের সম্পদমূল্য
নূর মাজিদ : শত কোটি ডলার বা তার বেশি স¤পদমূল্যের ধনীদের স¤পদমূল্য সার্বিক গড়ে কমেছে ৩৮ হাজার ৮শ কোটি ডলার। বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে এশীয় ধনীদের বিত্ত। এই মহাদেশের সকল ধনীর স¤পদমূল্য সার্বিক গড়ে কমেছে ৮ শতাংশ। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স¤পদ ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইউবিএস এবং হিসাবরক্ষণ সংস্থা প্রাইস ওয়াটার্স কর্পের গত শুক্রবার প্রকাশিত যৌথ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এশীয় ধনীদের স¤পদ কমার পেছনে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সংঘাত এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কর্তন। সেই তুলনায় মার্কিন ধনীরা বেশ আলো অবস্থানেই আছেন। প্রযুক্তিখাতে শত কোটি ডলারের অধিকারীদের সংখ্যাও বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ দেশটির প্রযুক্তিখাতের বিলিওনিয়ার সংখ্যা ৮৯ জনে উন্নীত হয়। পূর্ববর্তী বছরে এই সংখ্যা ছিলো ৭০ জন। প্রযুক্তিখাতে এই অবস্থান পরিবর্তন মার্কিন ধনীদের সার্বিক স¤পদ গড়ে কিছুটা ইতিবাচক অবস্থান যুক্ত করে তাদের এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের চাইতে এগিয়ে রাখে।
ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের শীর্ষ ধনীদের স¤পদ ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ শাখার প্রধান জোসেফ স্ট্যাডলার বলেন, বিলিওনিয়ারদের স¤পদ বৃদ্ধির প্রবণতা এখন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। শক্তিশালী মার্কিন ডলার এবং বিশ্ব পুঁজিবাজারের অনিশ্চিত আবহ, গতবছর যৌথভাবে বিশ্বের আর্থসামাজিক পরিবেশের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে । সার্বিক স¤পদমূল্য কমার পেছনে এটাই ছিলো মূল কারণ।
এদিকে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাছে বিশ্বের অধিকাংশ স¤পদবৃদ্ধির ঘটনা এখন বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়। স¤পদ বৈষম্যের এই প্রবণতা রাজনৈতিক ও সামাজিক অনেক পরিবর্তন আনে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এখন ধনীদের স¤পদ নিয়ন্ত্রণের কথা বলছেন, ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডেমোক্র্যাট সিনেটররা। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ অয়ারেন ইতিমধ্যেই শত কোটি ডলার স¤পদ অধিকারীদের ওপর ৬ শতাংশ স¤পদকর আরোপের প্রস্তাবনাকে তার রাজনৈতিক এজেন্ডায় রূপ দিয়েছেন। ওয়ারেনের ওপর বর্ষীয়ান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স অবশ্য আরো শক্ত অবস্থানে। তার মতে, এমন বিপুল বিত্তশালীদের অস্তিত্বটাই যুক্তিহীন।
রাজনীতির এই পালাবদল শুধু ওয়াশিংটনে নয়, বরং বৈশ্বিক আন্দোলনগুলোর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। ফ্রান্স থেকে শুরু করে হংকং পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা শীর্ষ ধনীদের স¤পদ নিয়ন্ত্রণের দাবী তুলেছেন। দশকের পর দশক ধরে চলা আসা এই ধরনের স¤পদ বৈষম্যই তাদের ক্ষোভের প্রধান কারণ। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান