এ বছরে ৩০ লাখ মানুষ রিটার্ন দাখিল করবে আশা এনবিআর চেয়াম্যানের
মো. আখতারুজ্জামান : এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অনেকে বলেন আমরা কর্পোরেট ট্যাক্স বেশি নিয়ে থাকি। কিন্তু এ ধারণা ভুল হবে যদি আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোর দিকে তাকাই। তাদের তুলুনায় আমরা কর্পোরেট ট্যাক্স কম নিয়ে থাকি। তবে আয়ের অন্য কোনো উৎস তৈরি হলে আগামীতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো হবে বলেও তিনি জানান। মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যালয়ে মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এ কথা বলেন। এ সময় এনবিআরের সদস্য কালিপদ হালদারসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন বলেন, এ বারের আয়কর মেলায় রাজস্ব আদায় ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। একই সঙ্গে নতুন ৪ লাখ করদাতাকে সেবা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। সেই সাথে চলতি অর্থবছরের আমাদের লক্ষ্য থাকবে করদাতার সংখ্যা ৪ কোটি করার। আমরা আশা করছি, একসময় রাজস্বের ৪০ শতাংশ আসবে আয়কর থেকে।
তিনি বলেন, এ বারে মেলা উপলক্ষ্যে এনবিআর জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইলের মাধ্যমে যে কেউ যে কোন সময় তার আয়কর প্রদান করতে পারবেন। এটা মেলা উপলক্ষ্যে শুরু হলেও বছরের অন্যান্য সময়ও চালু থাকবে। এতে করে কর দাতাদের জন্য কর প্রদান সহজ হলো। মোবাইলের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে কোনো সময় কর প্রদান করা যাবে। তবে এটা প্রান্তিক কর দাতাদের মধ্যে বেশি সারা ফেলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ক্যাসিনো বিষয়ে ৫০-৬০ জনের যে তালিকা এনবিআর নিয়েছে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমে যাদের আয়কর নথি পর্যাচালোচনা করছি তাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তির নথিতে আমরা আশাব্যঞ্জক তথ্য পেয়েছি। যার মাধ্যমে কিছু নতুন আয়করের উৎস দেখতে পাচ্ছি।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন বলেন, গত বছর আয়কর মেলা আয়োজনের ব্যয়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ২০ কোটি টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত তার চেয়ে কম খরচ হয়েছে। যার ফলে এ বছর ব্যয় কমানো হয়েছে। মেলার কারণে আয় কর প্রদানকারীর সংখ্যা প্রতিবছরেই বাড়ছে বলে তিনি জানান।
সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় আয়কর মেলা শুরু হচ্ছে কাল বৃহস্পতিবার। প্রতিবছরের মতো করদাতাদের জন্য এবারও আয়কর মেলায় কর বিবরণী থেকে শুরু করে কর পরিশোধের জন্য থাকবে ব্যাংক ও বুথ। একই ছাদের নিচে মিলবে সব সেবা।
করদাতাকে শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হবে। মেলায় নতুন করদাতারা ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতে পারবেন। এছাড়া ই-পেমেন্টের জন্য থাকবে পৃথক বুথ। ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর-এ শ্লোগানে ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হবে দেশব্যাপী আয়কর মেলা, চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।
এর মধ্যে রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে সাতদিন, জেলা শহরে চারদিন, ৪৮ উপজেলায় দুইদিন এবং আট উপজেলায় দিনব্যাপী করমেলা আয়োজন করবে এনবিআর। সব মিলিয়ে এবার দেশের ১২০ স্থানে অনুষ্ঠিত হবে এ মেলা।