মেলার প্রথমদিনে ৩২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা আয়কর আদায়
মেরাজ মেভিজ : আয়কর মেলার উদ্বোধনী দিনেই ব্যাপক সাড়া পড়েছে কর দাতাদের মাঝে। প্রথম দিনে দেশজুড়ে জমা পড়েছে ৩২৮ কোটি টাকা। সাধারণের পাশাপাশি প্রথম দিনেই রিটার্ন দাখিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও। পাশাপাশি বৃহৎ করদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গ্রামীণফোন ও ইসলামি ব্যাংকের কর দাখিল হয়েছে মেলায়।
গতকাল রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত সাত দিনব্যাপী আয়কর মেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে দেশব্যাপী জেলা শহরগুলোতে চলবে এ মেলা।
দিনশেষের পরিসংখ্যান বলছে, ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫৮ জন মেলা থেকে আয়কর সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন। এরমধ্যে রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৬৩ হাজার ২৭২টি। নতুন ই-টিআইন নিবন্ধন হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৬টি। আর দেশজুড়ে সর্বোমোট আয় হয়েছে ৩২৮ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৫ টাকা।
এদিকে মেলার সকালেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একজন আইনজীবী কর দাখিল করেন। তবে জানা যায়নি টাকার অংক। এ সম্পর্কে এনবিআর প্রধানের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিনিধির মাধ্যমে কর দিয়েছেন। তিনি নিজে উপস্থিত নেই। আইন অনুযায়ী যার কর তিনি নিজে না জানালে তা প্রকাশ করা যায় না।
তবে নিজের ও পরিবারের আয়কর রিটার্ন দাখিলের পরিমাণ নিজ মুখেই জানিয়েছেন মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগ থেকে ১৯৭০ সালে প্রথম আয়কর প্রদান করি। তখন কর দিয়েছি ৫৬০ টাকা। আর আজ আমি, আমার স্ত্রী ও দুই মেয়ের মোট করের পরিমাণ ৭ কোটি ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ১৯৯৬-৯৭ সালে থেকে শেষ ২৪ বছরে আমি ৫১ কোটি ৭২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৭৩ টাকা কর দিয়েছি।
এ বছর তার করের পরিমাণ কমেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী যোগ করেন, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর আমি আমার সম্পত্তি সন্তানদের নামে হস্তান্তর করে দিয়েছি। আমার সম্পদের পরিমাণ কমায়, আয়কর কমেছে তবে ওদেরটা বেড়েছে। এখন আমার প্রকৃত সম্পদ ৬৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। এ বছর আমার করযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। আয়কর দিয়েছি ৯১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আমার স্ত্রী কর দিয়েছেন ৭১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। আমার বড় মেয়ে কর দিয়েছেন ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আমার ছোট মেয়ে কর দিয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। বর্তমানে আমাদের চারজনের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
এদিকে প্রথম দিনে পিছিয়ে ছিলো না দেশের বৃহৎ করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও। এ সম্পর্কে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মেলায় সাধারণ করদাতাদের ব্যাপক সাড়ায় আমি মুগ্ধ। আশা করছি মেলায় এবার আয়করের নতুন রেকর্ড হবে। ব্যাক্তি করদাতারা ছাড়াও কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান আজ কর দাখিল করেছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোন ১৫০ কোটি ও ইসলামি ব্যাংক ১০০ কোটি টাকার কর দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করসেবা প্রদান ও কর সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছরের মতো এবারও আয়কর মেলার আয়োজন করে এনবিআর। এবার মেলার প্রতিপাদ্য সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর।