জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বদলে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন
আক্তারুজ্জামান : অসময়ের বৃষ্টি ভাসিয়ে নিতে পারে একটি ম্যাচ, এমনকি একটি টুর্নামেন্টও। গত জুন-জুলাইয়ে শেষ হওয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এমনটাই দেখা গেছে। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিলো বৃষ্টির কারণে। যা বিগত সবগুলো আসরের চেয়ে বেশি। ওই সময়ে ব্রিটেনে বৃষ্টির আবহাওয়া না থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টিতেই সব এলোমেলো করে দেয়। আর এসব হয়েছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে। ক্রিকেটের মতো সবধরনের ক্রীড়া ইভেন্টেই জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম কোয়ার্টজ।
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে জনপ্রিয় খেলা স্নো বোর্ড ও স্কি। যেগুলো বরফের ওপর খেলা হয়। কিন্তু উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ওই অঞ্চলে এখন খুব বেশিদিন বরফ পড়ে না। ফলে জনগণের অংশগ্রহণ যেমন কমেছে, তেমনিভাবে খেলাগুলোর দৈর্ঘও কমে এসেছে। যে কারণে ওই অঞ্চলের স্থানীয় আয়েও নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে এ বিষয় নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে জিওফিজিক্যাল রিসোর্স লেটার্স নামক গবেষণা জার্নাল। তারা জানিয়েছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে বরফ পড়া কমতে শুরু করেছে। শীতের মৌসুমে গড়ে মাত্র ৩৪ দিন বরফ থাকে। যা আগে প্রায় তিন মাস থাকতো। এখন শীতকালীন খেলাধুলা সংক্রান্ত আয়ে বার্ষিক ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। যেটা ওই অঞ্চলের স্কি খেলার রিসোর্টগুলোর আয়ের অন্যতম ভরসা।
কলোরাডো রাজ্যের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ি জস লেটেনবার্গ আক্ষেপ করে জানান, আগে পরিদর্শকরা বেড়াতে আসতো মূলত স্কি খেলার জন্য। যেটা ছিলো আমার ব্যবসায়ের মৌসুম। কিন্তু, গত তিন মৌসুমে মানুষের আনাগোনা অনেক কমে গেছে। আর এটা কমেছে মূলত বরফ কম পড়ার কারণে। যার জন্য দায়ী বিশ্বের পরিবর্তিত জলবায়ু। এখন আমার ব্যবসায়ে কি ঘটবে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।
এতো গেলো আর্থিক ক্ষতির কথা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইভেন্টগুলোতে অংশ নিতেও কষ্ট হচ্ছে প্রতিযোগীদেরও। এ বছরে দোহায় অনুষ্ঠেয় বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে অংশ নিয়ে হিট-স্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বেশ কজন প্রতিযোগী। এছাড়াও ২০২০ টোকিও অলিম্পিক আয়োজন নিয়েও আয়োজকদের মাথা ব্যথার শেষ নেই। কেননা আগামী বছর অলিম্পিকের আসর চলাকালীন উষ্ণতার কারণে অসুস্থ হতে পারেন প্রতিযোগীরা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান