নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে জাপানকে এক হাজার একর জমি দেয়া হচ্ছে, জানালেন অর্থমন্ত্রী
সাইদ রিপন : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, মেট্রোরেল ও ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ বেশ কিছু চলমান প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপান। চলমান প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন গতি দেখে জাপানীরা আমাদের নিয়ে সন্তুষ প্রকাশ করেছে। শনিবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী অর্থমন্ত্রী ও জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো’র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জাপানের প্রধান বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশ গড়তে ভবিষ্যতে আমাদের অনেক বড় বিনিয়োগ দরকার। বিনিয়োগ বাড়াতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দ্রুত এক হাজার একর জমিতে জাপানের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এর ফলে জাপানী উদ্যোক্তরা এদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। ইতিমধ্যেই ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অবশিষ্ট ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথমিকভাবে ৫০০ একর জমি বরাদ্দের বিষয়ে চুক্তি হবে। পরবর্তীতে আরও ৫০০ একর জমি দেয়া হবে। চলমান প্রকল্পগুলোতে ছোটখাট সমস্যা থাকলে সমাধান করা হবে।
তিনি বলেন, নিতসু, জেত্রো, নিপ্পন স্টিল, সুমিতোমো, টেক্কেন, হোন্ডা ও সজিত করপোরেশনের মতো বড় বড় জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সার্বিক খাতে বিশাল বিনিয়োগ করবে। ইতিমধ্যেই এসব কোম্পানি স্বল্প পরিসরে দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। সামনে বড় আকারের বিনিয়োগ নিয়ে আসছে তারা। এই বিষয়ে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। খুব শিগগরই দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসে বিনিয়োগের পরিমাণও নির্ধারণ হবে।
তিনি আরও বলেন, জাপান বাংলাদেশের পরিক্ষীত বন্ধু। জাতির পিতার হাত ধরেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অবকাঠামো অনেক ভালো। দেশে জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারই হাত ধরে বড় আকারে বিনিয়োগ আসবে বাংলাদেশে। আমরা সবসময়ই জাপানের কাছ থেকে অনেক বড় বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি। জাপানি রাষ্ট্রদূত এর আগেও বহুবার বলেছেন, আমাদের সকল অবকাঠামো ঠিক আছে। জাপানি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জাপান সরকারের সঙ্গে মিটিং করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমি আশা করি আগামী দিনে অপ্রত্যাশিতভাবে দেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী যখন জাপান যাবেন অথবা জাপানের প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসবেন সেই সময় বিনিয়োগের পরিমাণ ঠিক করা হবে।
জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের নানা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক উন্নয়নেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাপান। কিছু ইস্যু ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। জাপানি কোম্পানিগুলো ব্যবসার পরিসর আরও সম্প্রসারণ করতে চায়। আমি আশা করি সকল বিষয়গুলো আমরা অর্জন করতে পারবো। বাংলাদেশের পক্ষে এসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান