পেঁয়াজের বাজার বিশৃঙ্খল, তারপরও দাম কমেছে ২০-৩০ টাকা
মেরাজ মেভিজ : নতুন সরবরাহ না এলেও এক দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কমেছে পেঁয়াজের দাম। কারওয়ান বাজারে গতকালের চেয়ে কেজি প্রতি সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ব্যবসায়ীদের পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনায় পাইকারি বাজারের মূল্য তালিকার দামেও এসেছে সামঞ্জস্য। এরপরও বাজার ভেদে, শ্যামবাজারে পেঁয়াজের সঙ্গে কারওয়ানের ব্যবধান ৩০ টাকা।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজার ও খুচরা দোকানে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। একদিকে যখন পাইকারিতে কমছে পেঁয়াজের দাম, তখন স্থবির হয়েই আছে খুচরার বিক্রয় মূল্য। সাধারণ ক্রেতাকে এখনও মুদি দোকান থেকে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে কেজি প্রতি সেই ২২০ থেকে ২৪০ টাকাতেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়। যা একদিন আগেও বিক্রয় হয়েছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানেই কমেছে ন্যূনতম ১৫ থেকে ২০ টাকা। শ্যামবাজারে কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে আরও অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা কম দামে। ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।
এদিকে দেশি পেঁয়াজের দাম যখন সব বাজারে কমছে তখন শীর্ষে উঠে এসেছে মিয়ানমারের আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। শ্যামবাজারে ১৩০ টাকায় বিকানো মিয়ানমারের মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কারওয়ানে ঝাঁজ বেড়ে পৌঁছেছে ২১৫-২২০ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজও মিলছে ২৪০ টাকায়।
শেষ দেড় মাসের বাজার বিশ্লেষণে প্রথম বারের মতো দেশি পেঁয়াজের ওপর উঠে এসেছে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম। এদিকে কারওয়ান বাজারে গতকাল দেখা গেছে মূল্য তালিকার সামঞ্জস্যও। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. সুজন এ প্রতিবেদককে বলেন, আজ মোটামুটি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। আর মিশরের বড় পেঁয়াজ ১৮০-১৯০ টাকা, চায়না বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। তবে মিয়ানমার পেঁয়াজের দাম আজ পড়ছে কেজি প্রতি ২১৫-২২০ টাকা। বাজারে এই পেঁয়াজের দামই সর্বোচ্চ।
কারওয়ান বাজারের, বাজার মনিটরিংয়ের বেহাল দশায় মূল্য তালিকার তুঘলকি চিত্র নিয়ে গতকাল আমাদের অর্থনীতিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রভাব দেখা গেছে ঝোলানো মূল্য তালিকায়। গতকাল পাইকারির সব ব্যবসায়ীর লেখা পেঁয়াজের মূল্য তালিকায় ছিলো সামঞ্জস্য। এ সম্পর্কে দুপুরের দিকে ব্যাবসায়ী সমিতি থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী।
বিপরীতে, রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি চলছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২০০ টাকা ও মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে।
পাইকারি খুচরার বিশৃঙ্খলতায় রাজধানীর শ্যামবাজার থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুরের খুচরা দোকানগুলোতে আসতে সবমিলে দামের ব্যবধান দাঁড়াচ্ছে ৭০ টাকা।
তবে, আশার কথা শোনাচ্ছেন আমদানিকারকরা। বলছেন দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই। শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক শংকর চন্দ্র ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, প্লেনযোগে মঙ্গলবারের মধ্যেই পেঁয়াজ আসার কথা রয়েছে। আসলে বাজার অনেকটাই স্বাভাবিক হবে। তাছাড়া দেশি নতুন পেঁয়াজও বাজারে উঠছে। সবমিলে চার-পাঁচ দিনের মধ্যে বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান