দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ শতাংশের নিচে নামবে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি
নূর মাজিদ : ভারতের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতি দ্বিতীয় প্রান্তের শেষে আরও কমতে পারে। প্রান্তিক শেষ হওয়ার পর অগ্রিম পূর্বাভাসগুলো অন্তত এমন আভাসই দিচ্ছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, নোমুরা হোল্ডিংস ইঙ্ক এবং ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের মতো শীর্ষ আর্থিকখাতের প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৭ বা ২ শতাংশ হবে, এমন অনুমান করছেন। তবে সরকারিভাবে প্রান্তিক প্রবৃদ্ধির হালনাগাদ তথ্য জানানোর নির্ধারিত দিন হলো আগামী ২৯ নভেম্বর। খবর : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
উৎপাদন ও সেবা প্রবৃদ্ধি যদি আদৌ ৪ দশমিক ২ শতাংশ হয়, তবে এটা হবে ২০১২ সালে তৎকালীন সরকারের জিডিপি তথ্য নিরূপণের নতুন নিয়ম নির্ধারণের পর সবচেয়ে দুর্বল অবস্থান। এর আগে প্রথম প্রান্তিক শেষেও মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছিলো ভারতীয় প্রবৃদ্ধি। সিঙ্গাপুরভিত্তিক নোমুরা হোল্ডিং এই নেতিবাচক অবস্থানের পক্ষেই মত দিয়েছে। নোমুরার ভারত এবং এশিয়া শাখার প্রধান অর্থনীতিবিদ সোনাল ভার্মা বলেন, ‘(ভারতের) অর্থনীতির সকল খাতের উচ্চসূচকগুলো পড়তির দিকে। তাছাড়া, স্থানীয় বাজারে নগদ অর্থ সঞ্চালনেও দুর্বলতা বিদ্যমান। এর পেছনে অবশ্য ভারতের রপ্তানি পণ্যের দুর্বল বৈশ্বিক চাহিদাও অনেকাংশে দায়ী।’
উলে¬খ্য, দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চলতি বছর পাঁচবার সুদহার কমায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআই। মুদ্রানীতি শিথিলের পাশাপাশি সরকারের বাজেট থেকেও দেয়া হয় বড় অংকের প্রণোদনা। এর অংশ হিসেবেই ২ হাজার কোটি ডলারের কর্পোরেট কর রেয়াত দেয়া হয়। এরপরও প্রত্যাশিত উন্নতির দেখা না পাওয়ায় ডিসেম্বরে আরেকবার সুদহার কমানো হতে পারে।
স্টেট ব্যাংকের মুম্বাই শাখার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সৌম্য কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরে আমরা এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে আরও বড় অংকের সুদহার কমানোর পদক্ষেপ আশা করছি। কিন্তু, এই ধরণের প্রণোদনা তাৎক্ষনিকভাবেই কোন কার্যকর ফলাফল আনতে পারবে, বলেও আমরা বিশ্বাস করিনা।’
গত সপ্তাহে চাপে পড়েও কিছুটা আশাবাদ ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি কমতে কমতে তলায় নেমে এসেছে এখনই একথা বলার সময় আসেনি। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো (সরকারি রেয়াতের সুযোগ নিয়ে) অনেক নতুন বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব বিনিয়োগ কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগবেই।’ একথার মধ্য দিয়ে সীতারমণ অর্থনীতি ফের ঘুরে দাঁড়াবে এমন আশ্বাসের পাল¬াকেই ভারী করলেন। তবে এটা অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসে কোন প্রভাব ফেলেনি।
ক্যাপিটাল ইকোনমিস্টের ভারতীয় অর্থনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা শিলান শাহ বলেন, অর্থমন্ত্রী যেসব পরবর্তী উদ্দীপনার কথা বলছেন তা সামষ্টিক দুর্বলতার ফাঁকা স্থানগুলো পূরণ করবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে তিনি অন্যদের চেয়ে কিছুটা বেশি ৪ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পক্ষে মত দেন। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব