ব্যবসায় পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীরা
বিশ্বজিৎ দত্ত : পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের চেয়েও খারাপ অবস্থায় ব্যবসা করেন বাংলাদেশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীরা। বিশ্বে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অন্যতম ভালো ব্যবসার পরিবেশ রয়েছে ভারতে। তারা বিশ্বের সংখ্যালঘুদের ব্যবসার ভালো ৫টি জায়গার মধ্যে একটি। সর্বশেষ বিশ্বব্যাংকের ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক প্রতিবছর বিশের ১৯০টি দেশের সহজে ব্যবসা করার পরিবেশের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সহজে ব্যবসা করার জন্য ১০টি বিষয়কে এই রিপোর্টে প্রাধান্য দেয়া হয়। এরমধ্যে একটি হলো, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবসা করার জন্য রাষ্ট্র কি রকম সুবিধা দিয়েছে।
এই সূচকে পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবসা করা বাংলাদেশের চেয়েও সহজ। সেখানে পাকিস্তানের নেগেটিভ নাম্বার ২৮। আর বাংলাদেশের নেগেটিভ নম্বর ৭২। ভারতের নেগেটিভ নম্বর ১৩।
যদিও গত বছরের চেয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ব্যবসা করার সূচক কিছুটা ভালো হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীদের সূচক ছিলো ৮৯। ২০২০ সালে তা কমে হয়েছে ৭২। পাকিস্তানের মাইনরিটি রাইট ওয়াচের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে পাকিস্তানে ৬০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘু বসবাস করেন। তাদের বেশির ভাগইবাস করেন করাচিতে।
ডুয়িং বিজনেসের রিপোর্ট প্রকাশের পর পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী সেই দেশের সংবাদমাধ্যমে জানান, পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবসা করার জন্য সকল ধরনের নিরাপত্তা দিচ্ছে সরকার। বিশেষ করে তাদের ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা সৃষ্টি যাতে না হয় তার জন্য পাকিস্তানের ব্যাংকগুলোকে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যবসা সহজের বিষয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসার সার্বিক সূচকের পরিবর্তন হচ্ছে। ১০টি সূচকের মধ্যে সংখ্যালঘুদের সূচক হলো একটি। আমরা সেখানেও কাজ করছি। আগামী মার্চে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসছে তারা আমাদের পরিবর্তিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। তারপরে সূচকের আরও উন্নতি হবে। আমরা বিজনেসের সঙ্গে সম্পর্কিত সকল মন্ত্রণালয়কে একটি ছাতার নিচে নিয়ে আসছি। সেখানে টেবিলেই সিদ্ধান্ত হবে বিনিয়োগ ও ব্যবসার। সুতরাং সংখ্যালঘু কেন কোন ক্ষেত্রেই ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ব্যবসার খারাপ অবস্থার বিষয়ে অর্থনীতিবিদ আরএম দেবনাথ বলেন, সংখ্যালঘুদের ব্যাংক ঋণ পেতে সমস্যা হয়। সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীদের ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে আস্থা পায় না। তাছাড়া ক্ষমতায়নের বিষয়ও রয়েছে। দেশের ৬৪টি ব্যাংকের মধ্যে হিন্দু পরিচালক মাত্র ৫ থেকে ৭ জন। দেশের বড় চেম্বার অব কমার্সের কোনটিতেও কোনদিন কোনও হিন্দু বা অন্যকোন সংখ্যালঘু প্রেসিডেন্ট হয়নি। বিজিএমইএর যতোগুলো কমিটি হয়েছে তার একটিতেও কোনও হিন্দু পরিচালক কখনও ছিলেন না।
এনবিআর চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভুইয়া বলেন, বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ সংখ্যালগুরা বাংলাদেশে ভালো ব্যবসা করছে। কর প্রদানে অনেক হিন্দু ও অন্যধর্মের ব্যবসায়ী রয়েছেন। তার সর্বোচ্চ করদাতাও হয়েছেন। তারা যদি ব্যবসা করতে নাই পারতেন তবে কর দেন কীভাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজির সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ সম্প্রতি এক সেমিনারে বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। তবে আমরা ভালো ছাত্র হয়েও শিক্ষকের মনযোগ কাড়তে পারিনি। রেজা