রেমিট্যান্স বাড়াতে আমিরাতের আরএকে ব্যাংকের সঙ্গে জনতা ব্যাংক চুক্তি করবে, জানালেন অর্থমন্ত্রী
সাইদ রিপন : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে সহজে ও কম খরচে রেমিট্যান্স আনতে দেশটির আরএকে ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের জনতা ব্যাংক চুক্তি করবে। গতকাল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে ইউএই এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রী। চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অব ইউএই অ্যাম্বাসি আব্দুল্লাহ আলির নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা দেয়া। রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির মেরুদ-, ড্রাইভিং ফোর্স। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার কথা বর্তমানে সে পরিমাণ পাচ্ছি না। এর কারণ হলো, সেখান থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর কোনো সহজ রাস্তা নেই। সেজন্য প্রবাসীরা ভিন্ন পথে রেমিট্যান্স পাঠান। এটিকে বৈধ পথে আনার জন্যই ইউএইর ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তির এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি এখন ২২ শতাংশ হয়ে গেছে। আমরা মনে করছি রেমিট্যান্সে এ বছর মিনিমাম ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এটা সম্ভব হচ্ছে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার কারণে। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরএকে অনেক বড় ব্যাংক। দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ ব্যাংকটির ব্রাঞ্চ আছে। আমাদের দেশে জনতা ব্যাংকেরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক ব্রাঞ্চ আছে। তবে তাদের ব্যাংকের মতো এতোগুলো নেই। ফলে জনতা ব্যাংক একা সবাইকে সেবা দিতে পারবেনা। এজন্য দুই দেশের ব্যাংক মিলে একটি বিজনেস মডেল তৈরি করে কাজ করবে। এতে আমাদের রেমিট্যান্স আরও বেড়ে যাবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা জানেন না ভিন্ন পথে রেমিট্যান্স পাঠালে ভবিষ্যতে এর কী প্রভাব পড়তে পারে। এজন্য আমরা বিষয়টিকে আইনের আওতায় এনে বৈধ ও সহজ করে দিয়েছি। আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠায় তাহলে প্রতি লেনদেনে ২ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। অবশ্যই তা দেড় হাজার ডলারের মধ্যে হতে হবে। এই পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠালে তাকে কোনো প্রশ্ন করা হবে না। ফলে টাকাটা সাদা হয়ে যাচ্ছে। তাদের পরিবারসহ পরবর্তী প্রজন্ম এটা বৈধভাবে ভোগ করতে পারবে। এছাড়া প্রবাসী কর্মীরা এখন যেভাবে অবৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে, কোনো সময় তারা বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে বা ওই টাকা অন্য কোনো কাজে লাগালে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। তখন তাদের কাছে রাজস্ব দাবি করা হবে। আমার মনে হয় সেটা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যই এ কাজটি করা হয়েছে। এতে একটা কাজ হচ্ছে, তারা যে টাকাটা পাঠাচ্ছে এতে তাদের যে খরচ হতো তা কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনাও পাচ্ছে। সে কারণেই রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি, যা গত চারমাস থেকে বেশি হয়েছে। এ মাসে আরও অনেক বেশি হবে বলে আশা করছি।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এবং ট্রেজারার ও মিশন লিডার পিয়েরে ভ্যান পিটসহ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী বলেন, এডিবি আমাদের দেশে শিল্পায়নের বিকল্প উৎসে অর্থায়ন করতে আগ্রহী। তারা বিভিন্ন খাতে কাজ করছে এবার এ খাতে তারা কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এডিবির সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তারা কর্পোরেট হাউজের জন্য কর্পোরেট বন্ডের ব্যবস্থা করতে চায়। এই বন্ডগুলো হবে টাকায় সুতরাং কোনভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারের এক্সচেঞ্জ রেটের কারণে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবেনা। তারা খুবই উপযুক্ত মূল্যে এই বন্ডটি পরিচালনা করবে। শর্ট টার্ম ডিপোজিট নিয়ে লংটার্ম লোন এর সংস্কৃতি হতেও দেশের আর্থিক খাত বেরিয়ে আসতে পারবে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব