ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টিতে গেলো প্রতিষ্ঠা দিবস
বিশ্বজিৎ দত্ত : সার্ক দিবসে ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া আর কোন রাষ্ট্র প্রধান বাণী দেননি। পরস্পর বিবাদমান দুই রাষ্ট্রপ্রধান সার্কের সহযোগিতার বাণীর চেয়ে পরস্পরকে আক্রমণেই শেষ করলেন সার্ক দিবসের শুভেচ্ছা। সার্কের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এ দিন সার্কের সচিবালয়কে লেখা এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সার্ক দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার পথে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসকে হারাতে গোটা অঞ্চলকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে। তবেই আরও শক্তিশালী সার্ক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্বাস জন্মানো সম্ভব।’ সার্কের প্রতিষ্ঠা দিবসে বার্তা দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। তিনি জানান, সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকলে তবেই আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্ভব। ইমরানের বক্তব্য, ‘দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতারা এই দিনটিতে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নতির জন্য সার্ক সনদ গ্রহণ করেছিলেন। পাকিস্তান এখনও আঞ্চলিক সহযোগিতায় বিশ্বাসী।’
সার্ক দিবসে কোনো বাণী দেননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তবে সম্প্রতি ভারতের একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাতকারে তিনি সার্কের বিষয়ে বলেছেন, সার্কে আমরা দ্বিপাক্ষিক কোন আলোচনা করতে পারি না। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নিজস্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। আমার কাছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এই অঞ্চলের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও মালদ্বীপকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সার্ক গঠিত হয়। পরে এতে যুক্ত হয় আফগানিস্তান। পর্যবেক্ষক হিসাবে পরে সার্কে যুক্ত হয়, চীন ও মায়ানমার।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতায় কার্যত পাকিস্তানকে বাদ দিয়েই বিমসটেক নিয়ে এগোতে চাচ্ছে রাষ্ট্রগুলো। কিন্তু এই অঞ্চলের সন্ত্রাস প্রশ্নে বারবার অস্বস্তিতে পড়ায় সার্কে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রসঙ্গটিকে আবারো আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসতে চাইছে পাকিস্তান। সার্ক নিয়ে উদ্যোগী হয়ে পাকিস্তান বিশ্বকে বোঝাতে চাইছে তারা আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোয় আগ্রহী। ইমরানের বার্তা সেই কৌশলেরই অঙ্গ। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান
শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা ৩৫ বৈধ ষোষণা করে আদালতের নতুন নির্দেশনা
পূর্বপশ্চিম : বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগে ২০১৮ সালে এমপিও নীতিমালা জারির আগে যারা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে সার্টিফিকেট পেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছরের বয়সসীমা প্রযোজ্য হবে না।
প্রায় সাত মাস আগে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ থেকে দেওয়া রায়ের অনুলিপি গত রোববার প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে বয়সসীমা নীতিমালা হওয়ার আগেই এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট প্রাপ্তদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৫ বছরের বয়সসীমা আরোপ ছাড়াই আবেদন গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আবেদনকারীদের মধ্যে যারা সমন্বিত জাতীয় মেধা তালিকা অনুযায়ী যোগ্য তাদের আইন অনুযায়ী নিয়োগের। জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৪ জুন সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের পৃথক এমপিও নীতিমালা জারি করে। নীতিমালায় বলা হয়, ৩৫ বছরের বেশি বয়সী কেউ এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না।
পাশাপাশি শিক্ষকদের অবসরের বয়স হবে ৬০ বছর। এর পর একই বছরের ১০ জুলাই হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রথম থেকে ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সম্মিলিত একটি জাতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান এনটিআরসিএ। এর পর মেধাতালিকা থেকে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু নীতিমালায় শর্তের কারণে অনেকের বয়স ৩৫ বছর পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অনেকেই নিয়োগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। এর পর বঞ্চিতরা হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট করেন। এসব রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পৃথক রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে এসব রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি করে গত ১৬ মে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন। সুলতান আহমেদ। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান