রকি আহমেদ : গাছির অভাবে কাটা হচ্ছে না দেশে ও বিদেশে গুড়ে খ্যাতি অর্জনকারী যশোরের খেজুর গাছ। এতে দেশে চাহিদাসম্পন্ন এ সম্পদ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে চাহিদা মেটাতে গুড়ে চিনি মেশানোয় কমে যাচ্ছে মান।
যশোরে বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এমন তথ্য ও চিত্র চোখে পড়ে। যশোরের চৌগাছা ও খাজুরায় সড়কের ধার, খালের পাড়, মাঠে আকাবাঁকা রাস্তা ও ক্ষেতের পাশে সারি সারি খেজুর গাছসহ অনেক বাগান চোখে পড়ে। স্থানীয় গাছিদের কাছ থেকে জানা যায়, আশ্বিন মাসে গাছ তোলার (রস আহরণের জন্য প্রস্তুত করা) সময়। তবে তিন মাস পেরিয়ে অগ্রহায়ণ মাসের শেষ (২৮ তারিখ) হতে চললেও এখনো তোলা হয়নি অর্ধকাংশের বেশি গাছ।
চৌগাছার সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের দীর্ঘদিন খেজুর গাছ কাটা শের আলি গাছি বলেন, ‘এ গ্রামের মাঠে চার-পাঁচশ খেজুর গাছ আছে। আগে ২০-২৫ জন গাছ কাটতো। এখন দু-এক জন কাটে। আমি আগে দুশ-আড়াইশ গাছ কাটতাম এখন অর্ধেক কাটি।’ তবে তিনি গাছ না কাটার কারণ সম্পর্কে বলেন, গাছ কাটা অনেক কষ্টের কাজ আর টাওয়ারের কারণে আগের মতো রস হয় না। খাজুরার নঙ্গরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার গাছি বলেন, ‘এখন মানুষের আগের মতো অভাব নেই। ছেলেরা লেখাপড়া করছে তাই তারা গাছ কাটতে চাই না।’
অন্যদিকে খেজুর গুড়ের মান কমে যাওয়া নিয়ে চৌগাছা বাজারের গুড় ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সারাদেশে গুড়ের চাহিদা ব্যাপক কিন্তু আমরা গাছিদের থেকে গুড় কম পাই। তাই চাহিদা মেটাতে গুড়ে অল্প চিনি মেশাতে হয়।’ তারা খাঁটি গুড় ২০০ টাকা ও চিনি মেশানো গুড় ১৫০ টাকা বিক্রি করেন বলে উল্লেখ করেন।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো ইমদাদ হোসেন শেখ বলেন, ‘গাছ কাটা অনেক কষ্টের। মানুষ এখন সৌখিন হয়ে গেছে, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গাছি পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, গাছির অভাবে এবার ৬০ ভাগ খেজুর গাছ তোলা হয়নি। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান