জাপানের অর্থনীতিতে রেকর্ড ধস আবের অর্জনে করোনার থাবা
মুসা আহমেদ : করোনায় অর্থনৈতিকভাবে চরম বিপর্যস্ত জাপান। লকডাউনে বন্ধ থাকে শপিংমল-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ধসে যায় মোটরগাড়ি বিক্রির চাহিদা। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশটির রপ্তানি খাত। এতে দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতিতে রেকর্ড ধস দেখে শিনজো আবের এ দেশটি। মহামন্দা বিপর্যয় কাটিয়ে অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়াতে নেয়া হয় বেশকিছু প্রণোদনা প্যাকেজ। রয়টার্স
এ নিয়ে টানা তিনটি প্রান্তিকের ধসে মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড সর্বনিম্নে। যা বিগত এক দশকেও দেখেনি জাপান। এতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ২০১২ সালের শেষ দিকে যে প্রণোদনামূলক নীতি গ্রহণ করেছিলেন তা এখন কেড়ে নিয়েছে কোভিড-১৯ মহামারী।
মে মাসের শেষ দিকে করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। এতে করে বিপর্যয় থেকে নতুন করে উদীয়মান হতে শুরু করে অর্থনীতি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনীতিতে ফের সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভোগব্যয় কমিয়ে অর্থ ধরে রাখার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে গ্রাহকদের মাঝে। ফলে চলতি প্রান্তিকে মাঝারি ধরনের গতিতে ঘুরে দাঁড়াবে দেশটির অর্থনীতি। সোমবার প্রকাশিত দেশটির সরকারি তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটির এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বার্ষিক ধসে যায় ২৭.৮ শতাংশ। যা ১৯৮০ সালের পর সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের রেকর্ড। তবে আর্থিক বাজারের পূর্বাভাসের তুলনায় কিছুটা বেশি ধস হয়েছে দ্বিতীয় প্রান্তিকে। তাদের পূর্বাভাসে ২৭.২ শতাংশ ধসের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে য্ক্তুরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ধস কিছুটা কম হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩২.৯ শতাংশ ধস দেখে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র। তথ্যমতে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জাপানের মোট জিডিপি কমে দাঁড়ায় ৪৮৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনে। যা ২০১১ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের পর সর্বনি¤œ জিডিপির রেকর্ড। সেসময় টানা দুই দশকের অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মুদ্রা সংকোচনের বড় সঙ্কট চলছিলো দেশটিতে। এদিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈদেশিক পণ্য চাহিদায় বিপর্যয় দেখা দেয় রপ্তানির চেয়ে বেড়ে যায় আমদানি। ফলে এ খাতে মোট জিডিপির রেকর্ড ৩ শতাংশ কমে যায়। মোটরগাড়ির রপ্তানি কমে যায় ব্যাপক। রপ্তানিপণ্যের শিপমেন্ট কমে যায় ১৮.৫ শতাংশ। এ বিষয়ে অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান নরিনচুকিন রিসার্চ ইনস্টিউট’র প্রধান অর্থনীতিবিদ তাকেশি মিনামি বলেন, লকডাউনে ভোগব্যয় ও রপ্তানি বাণিজ্য কমে যাওয়ায় অর্থনীতিতে বড় ধসে পড়েছে জাপান। তার প্রত্যাশা, জুলাই সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচকমুখী হবে দেশটি।