বন্যায় ৩৩ জেলায় ফসল ও গবাদিপশুর ক্ষতি ১১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার : সিপিডি
সোহেল রহমান : এর মধ্যে ফসলের ক্ষতি ৪.২০ কোটি ডলার ও গবাদিপশুর ক্ষতি ৭.৪৫ কোটি ডলার। এছাড়া ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৯ হেক্টর কৃষি জমি, ১৬ হাজার ৫৩৬ হেক্টর মাঠ, ৮১ হাজার ১৭৯টি টিউব-ওয়েল, ৭৩ হাজার ৩৪৩টি ল্যাট্রিন ও ১ হাজার ৯০০র অধিক স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্যের মধ্যে ২২০টি ইউনিয়নের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭টি ইউনিয়নে ৪ কিলোমিটারেরও দীর্ঘ বাঁধ, ৫৩টি ইউনিয়নে ২ থেকে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও ৭০টি ইউনিয়নে ১ থেকে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার ‘সাম্প্রতিক বন্যা : ক্ষয়ক্ষতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে ক্ষয়ক্ষতির এ চিত্র তুলে ধরেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’ (সিপিডি)।
সিপিডি বলেছে, তবে আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও অনেক অ-আর্থিক ক্ষতি হয়েছে যেগুলো (উৎপাদনমুখী কর্মঘন্টা, ক্রয় ক্ষমতা ও বিক্রি কমে যাওয়া, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ইত্যাদি) পরিমাপ করা কঠিন।
সিপিডির হিসাবে, ৩৩ জেলার বন্যায় ১৬২ উপজেলা ও ১ হাজার ৬৫টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১১ লাখ ৯৭ হাজার ২৯৭টি এবং মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ২৮ হাজার ৬৪৬ জন। পানিতে ও সর্প দংশনসহ বিভিন্ন কারণে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ জন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামালপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা।
‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ দেয়া চাল ও নগদ অর্থের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন’ উল্লেখ করে সিপিডি বলেছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মোট চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৬৩ ভাগ অর্থাৎ ১২ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এতে গড়ে মাথাপিছু চাল সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক আড়াই কেজি। অন্যদিকে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এতে গড়ে মাথাপিছু নগদ সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৫ টাকা ৭০ পয়সা।
সিপিডির হিসাবে, বরাদ্দকৃত অবশিষ্ট চাল ও নগদ সহায়তার অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করার পর উভয় খাতে মাথাপিছু সহায়তার পরিমাণ কমে দাঁড়াবে বর্তমানের তুলনায় অর্ধেক।
সংস্থাটি বলেছে, দৈনিক দেড় কেজি হিসাবে একটি পরিবারের জন্য মাসে প্রায় ৪৬.২ কেজি চাল প্রয়োজন। সে হিসাবে বর্তমান বরাদ্দ দ্বারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মোট পরিবারের ৫৪ শতাংশকে সহায়তা দেয়া সম্ভব। ক্ষতিগ্রস্ত শতভাগ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিতে হলে আরও ১১ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে শুকনো খাবারের প্যাকেটের বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ১০ লাখ ৫৬ হাজার। বর্তমান বরাদ্দ দ্বারা ১২ শতাংশের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
অন্যদিকে বর্তমান নগদ সহায়তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মাত্র ২ শতাংশ মানুষকে সহায়তা দেয়া সম্ভব। অবশিষ্ট ৯৮ শতাংশকে নগদ সহায়তার আওতায় আনতে হলে আরও কমপক্ষে ১১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন।