অর্থনীতি ডেস্ক : সাধারণ পোশাকের পাশাপাশি দামি উন্নতমানের ফেন্সি পোশাকও রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। অনেকেই বাংলাদেশের ফেন্সি পোশাক পণ্যকে নতুন এক সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন। ক্রেতাদের এই পণ্যের প্রতি চাহিদাও বাড়ছে। তবে আগে সস্তা কিছু পণ্য তৈরি ও রফতানি হলেও এখন আস্তে আস্তে যোগ হচ্ছে দামি ও মনিহারি পণ্য (ফেন্সি আইটেম)। অধিকাংশ গার্মেন্ট কারখানাই এখন মনিহারি পণ্য পোশাক তৈরি করছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ফেন্সি আইটেম পোশাকের চাহিদা বাড়লেও স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল না পাওয়ার কারণে এসব দামি পণ্য খুব বেশি তৈরি করা যাচ্ছে না। দামি আইটেমগুলো করতে হলে লিড টাইম (উৎপাদন থেকে ক্রেতার হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত) হতে হবে কম। কিন্তু আমাদের লিড টাইম বেশি হওয়াতে এসব দামি পণ্য রপ্তানি বাড়ানো যাচ্ছে না। তবে ফেন্সি পোশাক রপ্তানি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে তিনি জানান। আমাদের লিড টাইম কমিয়ে আনতে হলে আমাদের আরও ব্যাকওয়ার্ড ইন্ডাস্ট্রি লাগবে।
এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মোট রপ্তানির অন্তত ১০ শতাংশই ফেন্সি আইটেমের পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। আমি আমেরিকার এক ক্রেতার জন্য সারা বছরই লেডিস আইটেমের ফেন্সি পোশাক তৈরি করি। তার মতে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন রপ্তানি হয়েছে ফেন্সি আইটেমের পোশাক। জাপানে ফেন্সি আইটেম পোশাকের চাহিদা বেশি। ইউরোপ-আমেরিকায় বেশি চলে। ফেন্সি আইটেমের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে এইচএস কোড আলাদা না থাকায় কী পরিমাণ এই পোশাক রপ্তানি হচ্ছে তা বের করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসেবে নতুন অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৯১ কোটি ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক লক্ষ্যের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। জুলাই মাসে শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২৪ কোটি ডলারের।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুশের্দী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে টিকে থাকার প্রয়োজনেই আমাদেরকে দামি উন্নতমানের ফেন্সি আইটেমগুলো তৈরি করতে হচ্ছে। মানুষের রুচির সঙ্গে মানুষের আর্থিক উন্নতি হয়েছে। যে কারণে ফেন্সি আইটেমগুলোর চাহিদাও বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকরা কঠিন কঠিন প্রোডাক্টও তৈরি করছে। দামি দামি মেশিনও নিয়ে এসেছে। তবে ডিজাইনে আরও ভালো করতে হবে। তার মতে, এখনও দামি টপ তৈরিতে চায়না এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশও এগিয়ে চলছে জোর কদমে। জানা গেছে, ক্রেতারা সংখ্যার দিক থেকে ফেন্সি পোশাক কম নেয়। তবে দাম দেয় বেশি। বিভিন্ন দেশের বড় বড় ক্রেতা লাখ লাখ পিস শার্ট বা প্যান্ট নেন। কিন্তু ফেন্সি পোশাক নেন সংখ্যায় খুবই কম। অনেক সময় ৫০ হাজার পিসও ফেন্সি পোশাক রপ্তানি করেন তৈরি পোশাক মালিকরা। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।