বরগুনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা
শাহীন চৌধুরী : দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবেলায় বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি মাঝারি আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিও দৃষ্টি দিয়েছে সরকার। কিন্তু জ্বালানি সংকট থাকায় অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্রই এখন আমদানি করা কয়লা দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বরগুনায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শুরুতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সমস্যা, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে এই কেন্দ্রের নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০২২ সালের শুরুতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবার কথা ছিল। সূত্রমতে, ১৭০ একর জমির ওপর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাটি ভরাট এবং অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকার কিছু জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ইজারা নেওয়া হয়। ওই জমিতে বসবাসকারি ১৩৯টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসন করা নিয়ে জটিলতার কারণে কিছুটা সময় লেগে যায়।
সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড-এর সঙ্গে গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চীনের পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড।
বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া গ্রামটিই এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কেন্দ্রস্থল। অবশ্য প্রকল্পটি ‘বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’ নামে পরিচালিত হবে। প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বা ৫৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২৫ বছর এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দর ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৭ টাকা, প্রতি টন কয়লার দর ১২০ ডলার হিসেবে। তবে কয়লার দাম কম থাকলে বিদ্যুতের দামও কমে যাবে।
আইসোটেক সূত্রের দাবি, তাদের পার্টনার ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। তারা ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দক্ষতার সঙ্গে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। তারা বর্তমানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট। সূত্রমতে, বর্তমান সরকার এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৮৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৬৫৯ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বর্তমানে মোট ১৩ হাজার ৭৭১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। আর এ কেন্দ্রগুলো চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে উৎপাদনে যাবে।
এদিকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মঈনুল আলমের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত সহকারি সাগির আহমেদ বলেন, দাঁতের চিকিৎসার কারণে এমডি সাহেব বর্তমানে রেস্টে আছেন। এমনকি তিনি নিজেও এখন ছুটি কাটাচ্ছেন। রেজা