বন্ধ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের সরকারি স্কুলে ভর্তির নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতিতে নভেম্বরে স্কুল খোলা না গেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত আপাতত বন্ধ ঘোষণা রয়েছে। এ অবস্থায় সংসদ টিভি, বেতার ও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার কার্যক্রম যথা শিগগিরই শুরু হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমাদের সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগের মতামত নিয়ে করোনা পরিস্থিতি শেষ না হলে বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যেতে চাই না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত, বাচ্চাদের নিরাপত্তা যতক্ষণ না পর্যন্ত সুরক্ষিত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত স্কুলগুলো খুলবো না। এসময় সিনিয়র সচিব আকরাম বলেন, আমরা দু’টি পরিকল্পনা মাথায় রেখেছি। অক্টোবরে একটা, আর যদি নভেম্বরে খোলা যায় তার জন্য একটা পরিকল্পনা করা আছে। যদি খোলা যায় তবে মূল্যায়নের বিষয়ে একটা ব্যবস্থা নিতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সচিব বলেন, স্কুল খোলা না গেলে তো (বার্ষিক) পরীক্ষা হবে না। প্রধানমন্ত্রী তো বলেছেন স্কুল যদি খোলা না যায় তাহলে তো পরীক্ষা হবে না। আমরাও তাই বলছি।
মূল্যায়ন কীভাবে হবেÑপ্রশ্নে সচিব বলেন, সেটা আপনারা বোঝেন। স্কুল না খোলা গেলে আমরা কী মূল্যায়ন করবো। ১৯৭১ সালে আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। তখন বই পেতে মার্চ মাস হয়ে যেত। মার্চে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে স্কুল, কলেজ, আদালত সব বন্ধ করে দিলেন। মার্চ থেকে তো বই নেই। আমরা ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে স্কুলে গেছি, সেভেনে আমাকে উঠিয়ে দিয়েছে, সমস্যা নেই। স্কুল খোলা না গেলে কোনো মূল্যায়ন হবে না।
এদিকে করোনার মধ্যে আর্থিক সংকটে পড়ে কোনো কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল- হোসেন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক কেজি স্কুল বন্ধ রয়েছে, আর্থিক সঙ্কটের কারণে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ঝরে পড়ার হারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেজ্ঞদের।
এ নিয়ে গণশিক্ষা সচিব বলেন, অনেকগুলো কিন্ডার গার্টেন আছে, সে সব কিন্ডার গার্টেন আর্থিক কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি সব ডিপিওকে (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস)। যদি কেজি স্কুল বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করায়। কোনো স্টুডেন্ট বাদ যাবে না।
সচিব বলেন, প্রত্যেক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব দিয়েছি কোভিডের পর যখন স্কুল খুলবে তার আগেই নিজেদের স্কুলের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করবে। সেই পরিকল্পনায় সবকিছু থাকবে, নিরাপত্তা, ঝরে পড়া। সঠিকভাবে সব মেইনটেন করতে পারলে আশা করি, আমাদের যে আশঙ্কা যে ঝরে পড়া, সেটা হয়তো অনেকটাই রোধ করতে পারবো। রেজা