রাশিদ রিয়াজ : শুধু ফুটবল খেলে ২৬ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করেন লিওনেল মেসি। বিশে^র সবচেয়ে বেশি আয়ের এই খেলোয়াড় অন্যান্য ব্যবসা থেকেও মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করেন। ৩৩ বছরের এ ফুটবলারের সপ্তাহে বেসিক স্যালারি হচ্ছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার পাউন্ড। তিনি এ টাকায় কাতালোনিয়ায় তার বাড়িতে এক বছর অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারেন। তবে মেসি খুবই ঘরকুনো হওয়ায় মিডিয়ার নজরে তিনি খুব কমই পড়েন। মেসির জীবনযাপন অনেকটা বদ্ধ দরজার ভেতরেই কাটে। ফলে তার আয় কিংবা ব্যয় সম্পর্কে অনেকে জানেন না। ক্রীড়া সামগ্রী তৈরি কোম্পানি এ্যাডিডাসের সঙ্গে মেসির রয়েছে আজীবন চুক্তি। বছরে এজন্যে তিনি পান ১২ মিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে এ্যাডিডাসের সঙ্গে চুক্তি হয় তার। ২০১৫ সালে ‘এ্যাডিডাস মেসি’ নামে একটি বুট বাজারে ছাড়ে। এছাড়া পেপসি, ডোলসি এন্ড গাবানা, গ্যাটোরেড, হুয়াওয়ে, মাস্টারকার্ড সহ বিভিন্ন শীর্ষ ব্রান্ডের সঙ্গে চুক্তি আছে মেসির। ফোর্বস বলছে গত বছর মেসি রোনাল্ডোকে টপকে বিশে^র শীর্ষ আয়ের খেলোয়াড় হিসেবে ৩৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেন।
গত বছর জুলাইতে লিও মেসি ম্যানেজমেন্ট এন্ড গিনি হিলফিগারের সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করে। মেসির বোন মারিয়া সোল এ কোম্পানি দেখাশোনা করেন। ‘দি মেসি স্টোর’এ ভক্তদের ভীড় সবসময় লেগে থাকে। এ কোম্পানির ওয়েবসাইটে কাপড় ছাড়াও মেসির জীবনবোধ, মূল্যবোধ, তার দর্শন ও স্পোটর্সম্যানশিপ সম্পর্কে নানা তথ্য রয়েছে। এছাড়া জ্যাকোব এন্ড কোম্পানির সঙ্গে মেসি যুক্ত আছেন। এ সুইস কোম্পানিটি বিশে^র নামিদামি ঘড়ি তৈরি করে। এসব ঘড়িতে স্বর্ণ, হীরাযুক্ত রয়েছে যা মাত্র ৩৬টি তৈরি করা হয়। ৪৬ হাজার থেকে দেড় লাখ ডলার মূল্য রয়েছে এসব ঘড়ির।
চীনে তৈরি করা হয়েছে লিওনেল মেসি থিম পার্ক। নানজিংএ এ থিমপার্ক দেখতে আসেন মেসি ভক্তরা এবং এ থেকে প্রচুর আয় হয়। রোবটিক, ভার্চুয়াল, মিশ্র রিয়েলিট স্পেস, হলোগ্রাফিক প্রযুক্তি, আর্ট ইভেন্ট রয়েছে মেসি ও তার খেলা ফুটবল নিয়ে এ থিমপার্কে। এবছরের শেষে এ থিমপার্কটি তৈরি পুরোপুরি শেষ হলে বিশে^র সর্ববৃহৎ থিমপার্কের স্থান পাবে এ বিনোদন কেন্দ্রটি।
মেসির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তার দাতব্য ও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকা- দেখাশোনা করে মেসি ফাউন্ডেশন। ২০০৭ সালে বোস্টন, মাসাচুয়েটস ঘুরে এসে এধরনে ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন মেসি। দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত শিশুদের দেখাশোনা করে থাকে তার ফাউন্ডেশন। স্পেনে এ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় একটি পেড্রিয়াট্রিক অনকোলোজি সেন্টার খোলা হয়েছে। এটি ক্যান্সারের চিকিৎসা দিয়ে থাকে। ২০১৪ সাল থেকে স্পেশাল অলিম্পিকে সহায়তা দিয়ে আসছে মেসি ফাউন্ডেশন। জোসেপ ক্যারিরাস ফাউন্ডেশনকে শিশুদের লিউকেমিয়া নিয়ে গবেষণা করার জন্যে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকেন। ইউনিসেফের এ্যাম্বাসেডর মেসি। হাইতি, সিরিয়া, ব্যাংকক, নেপাল ও কেনিয়ায় মেসি ঘুরেছেন ইউনিসেফের এ্যাম্বাসাডার হিসেবে। সিরিয়ার শরণার্থী শিশুদের জন্যে ’ব্যাক টু লার্নিং’ প্রকল্পে মেসি অকাতরে দান করেছেন। সম্পাদনা : শোভন দত্ত