চকবাজারে র্যাবের অভিযান সাড়ে ৩ কোটি টাকার নকল কসমেটিকস জব্দ
সুজন কৈরী : পুরান ঢাকার চকবাজারের মৌলভীবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নকল বিদেশি কসমেটিক্স জব্দ করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে ৫ জনকে আটকের পর প্রত্যেককে দুই বছরের কারাদ- দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মৌলভীবাজার তাজমহল টাওয়ার ও চম্পাটুলি লেন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। র্যাব-১০ এবং বিএসটিআই’র সহযোগিতায় পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
তিনি বলেন, বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য নকল করে মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে অভিযানটি চালানো হয়। এ সময় দেখা যায়, তাকওয়া এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান চীন থেকে বোতল কিনে আনার পর স্থানীয়ভাবে নকল পণ্য রিফিল করে বাজারজাত করে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রোডাক্ট তৈরি করে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
জনসন শ্যাম্পু, পাউডার, ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, লোশন ইত্যাদি পণ্য তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এই পণ্যগুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরের নানা রকম সমস্যা ও ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। তাদের দুই বছরের কারাদ- ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার নকল বিভিন্ন বিদেশী ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য জব্দ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ৪টি দোকান এবং ৩টি শো-রুম সিল গালা করা হয়েছে।
সারওয়ার আলম বলেন, তিন ক্যাটাগরিতে তারা পণ্য নকল করে থাকে। প্রথমত চায়না থেকে শুধু প্রডাক্টের খালি বোতল আমদানি করে, দ্বিতীয়ত নিজেরাই বিভিন্ন কোম্পানির নামে পণ্য এবং বোতল তৈরি ও সর্বশেষ বাজার থেকে ব্যবহৃত পণ্যের খালি বোতল কিনে এনে ওয়াশ করে নকল পণ্য রিফিল করে বাজারে বিক্রি করে।
অভিযানে অংশ নেয়া বিএসটিআই’র ফিল্ড অফিসার মো. শরিফ হোসেন বলেন, অভিযানে দেখা গেছে, তাকওয়া এন্টারপ্রাইজের প্রথম থেকে ভবনের পাঁচ তলা পর্যন্ত মোট চারটি গোডাউন রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ফর্সাকারী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু, সাবানসহ প্রায় ৫০ ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করে বাজারজাত করছে। যা সবগুলো নকল। অভিযানকালে আনুমানিক সাড়ে তিন কোটি টাকার প্রোডাক্ট জব্দ করা হয়েছে। এসব পণ্য বিএসটিআই থেকে অনুমোদন দেয়া হয় না এবং সবগুলোই অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, ফর্সাকারী ক্রিম মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলোতে হাইড্রোক্লিন এবং মার্কারি ব্যবহার করা হয়। ফলে মানব দেহেও ক্ষতি হয়। সেইসঙ্গে ক্যান্সারও হতে পারে।