২১ হাজার কোটি টাকার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২য় ইউনিটের উৎপাদন নভেম্বরে
শাহীন চৌধুরী : দেশের কয়লা ভিত্তিক সর্ববৃহৎ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষমূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২য় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন আগামী অক্টোবর অথবা নভেম্বরে শুরু হবে। এদিকে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত জাতীয় গ্রিড লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত আরও ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গত বছর জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রমতে, সেখান থেকে এখন ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ১৬৩ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বৈত সার্কিটের উচ্চভোল্টেজ সঞ্চালন লাইনটি পটুয়াখালি সদরÑবরগুনা, ঝালকাঠি, বরিশাল হয়ে গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে নির্মিত ৪০০/২৩০ গ্রিড উপকেন্দ্রে যুক্ত হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
এদিকে দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে হলে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত একই ক্ষমতার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে হবে। আর এই সঞ্চালন লাইন নির্মিত না হলে দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হয়ে পড়বে। পিজিসিবি সূত্রমতে, গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হতে আগামী বছর ডিসেম্বরে গিয়ে ঠেকবে। অথচ এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ফেজে নির্মিত হবে আরও ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ওই ফেজের কার্যক্রমও আগামী বছর শুরু হবে। এ প্রসঙ্গে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মওলা আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, আমরা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন নির্দিষ্ট সময়ে শুরু করেছি। দ্বিতীয় ইউনিটেও আমাদের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। আমরা আগামী অক্টোবরেই বাণিজ্যিক উৎপাদতে যেতে প্রস্তুত। গ্রিড বা সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজতো আমাদের নয়। তাই নির্দিষ্ট সময়ে গ্রিড লাইন নির্মিত না হলে আমাদের কিছু করার নেই।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎখাতে বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পের অন্যতম পায়রা কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা ৫০ ভাগ ইন্দোনেশিয়া থেকে এবং ৫০ ভাগ অষ্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা হচ্ছে। জাহাজে আসা কয়লা খালাসের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একাধিক নিজস্ব জেটি রয়েছে যাতে কোন বন্দরের ওপর নির্ভর করতে না হয়। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট উৎপাদনে গেলে প্রতি বছর ৪ মিলিয়ন টন বা ৪০ লাখ টন কায়লা ব্যবহৃত হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন যাতে ব্যহত না হয় সেজন্য সব সময় দুই মাসের কয়লা মজুত রাখা হবে। বিপিডিবি এই কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ ক্রয় করে তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করছে। দ্বিতীয় ইউনিট বা পরবর্তী ফেজের বিদ্যুতও একই ভাবে বিপিডিবি ক্রয় করবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির লাইফ টাইম ধরা হয়েছে ২৫ বছর। রেজা