৭৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে শীর্ষে এক্সিম ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণে শূন্যের কোটায় জনতাসহ ৬ ব্যাংক
মো. আখতারুজ্জামান : করোনাকালিন ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার কৃষদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঋণের পাঁচ হাজার কোটি টাকার ব্যবস্থা করছে। ব্যাংকগুলোতে এই ঋণ প্রদানে অনীহা দেখা গেছে। ৪৩টি ব্যাংকের জন্য বারাদ্দ করা টাকার মধ্যে মাত্রা এক হাজার ১১৪ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৮১৫ জন কৃষক। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকসহ ছয় ব্যাংক এখনও এই ঋণ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ব্যাংকগুলোর আগস্ট প্রান্তিকের প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
জানা যায়, এই ঋণে কৃষকের কাছ থেকে নেওয়া চার শতাংশ হারে সুদের সঙ্গে এক শতাংশ সরকারের কাছ থেকে পাওয়ার ফলে প্রণোদনা বিতরণে অপারেটিং চার্জ হিসেবে ৫ শতাংশ প্রাপ্ত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চুক্তি করলেও রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকসহ বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ শুরুই করেনি। এসব ব্যাংকের বিতরণের জন্য যথাক্রমে ১২০ কোটি টাকা, সাত কোটি টাকা, দুই কোটি টাকা, ৬২ কোটি টাকা, এক কোটি টাকা ও ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
মধুমতি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিউল আজম জানান, আমরা ছোট ব্যাংক। আমাদের পরিধি কম। তবে প্রণোদনার ঋণ বিতরণে বিষয়ে যে শূন্যের কথা বলা হয়েছে তা ঠিক নয়। তবে কি পরিমাণ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, রূপালী ব্যাংকের বরাদ্দকৃত অর্থের ৫৭ শতাংশ বিতরণ করেছে। যার পরিমাণ ৩০ কোটি টাকা। কৃষি ব্যাংক তার জন্য বরাদ্দের ৫১ শতাংশ বিতরণ করেছে। যার পরিমাণ ৬২০ কোটি টাকা। সব চেয়ে বেশি বিরতণ করেছে এক্সিম ব্যাংক। ব্যাংকটির বরাদ্দের ৬০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। যার পরিমাণ ৭৬ কোটি টাকা। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৩০ শতাংশ বা ২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, ডাচ বাংলা ব্যাংক বরাদ্দের ৩০ শতাংশ বা ২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিতরণ করেছে এবং দ্য সিটি ব্যাংক বরাদ্দের ৩২ শতাংশ বা ১৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। বাকি ৩১টি ব্যাংক প্রণোদনা বিতরণ শুরু করলেও আশানুরূপ নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাকালিন অর্থনীতিতে গতিশীল রাখবে কৃষি খাত। এটা অন্য খাতের মত নয়। যখন সমস্যা হবে তখনিই সমাধান করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে আরও দায়িত্ব নিয়ে এই ঋণ বিতরণে কাজ করতে হবে। শুধু বড় খাতে ঋণ দিলে হবে না। অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে হলে সব ধরনের খাতকে সচল রাখতে হবে।
জানা যায়, যেসব ব্যাংক কৃষি খাতের প্রণোদনা বিতরণ শুরুই করেনি, কেন তারা কৃষি খাতে প্রণোদনা বিতরণ শুরু করেনি, কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, কৃষি খাতে প্রণোদনার টাকা দেওয়া হচ্ছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। এমনকি সুদহার যাতে বেশি না হয়, এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এক শতাংশ হারে সুদের টাকাও দিচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শুধু বিতরণ করে ক্লেইম করলেই বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা দিয়ে দেবে। এতো সুযোগ সুবিধার পরে কৃষি খাতে প্রণোদনা ঋণ বিতরণে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ১ হাজার ৭৮৬টি প্রতিষ্ঠানের ২৩ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন হয়েছে। এ প্যাকেজের আওতায় ৯ শতাংশ সুদের মধ্যে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান দেবে, বাকিটা বহন করবে সরকার। গত ৪ মে থেকে এ প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হয়। রেজা