১১ মাসে পিডিবি-কে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার
সোহেল রহমান : তিনটি উৎস থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনে কম মূল্যে বিক্রি করায় ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড’ (বিপিডিবি)-এর লোকসান বাড়ছে। এ তিন উৎস হচ্ছেÑ ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট’ (আইপিপি), ‘ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান’ (রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার) এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি।
পিডিবি’র হিসাবে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ‘আইপিপি’ থেকে উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয়ে। এ জন্য তিন মাসে (মার্চ-এপ্রিল-মে) পিডিবি লোকসান দিয়েছে ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। একই সময়ে কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে লোকসান হয়েছে ৪১৪ কোটি টাকা। এছাড়া ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনায় আলোচ্য সময়ে লোকসান হয়েছে ১১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ উল্লেখিত তিন উৎস থেকে ওই তিন মাসে সংস্থাটির মোট লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কোটি ৪ লাখ টাকা। মাসওয়ারি হিসাবে, মার্চে আইপিপি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে ১৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ক্ষতি হয়েছে ৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এপ্রিলে মাসে তিন উৎস থেকে লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ৪২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ১৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ও ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। মে-তে লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ৫০১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ১২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা ও ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
পিডিবি’র মতে, বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় মূলত নির্ভর করে ব্যবহৃত জ্বালানির ওপর। বর্তমানে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, স্থাপিত ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। এ কারণে লোকসানও বাড়ছে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উচ্চ দামে বিদ্যুৎ কিনে ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রির ফলে লোকসান কাটিয়ে ওঠতে সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই ২০১৯- মে ২০২০) পিডিবি-কে মোট সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে সম্প্রতি শর্ত সাপেক্ষে ১ হাজার ১৪৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, এর আগে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৮ মাসে পিডিবি’র লোকসানের বিপরীতে ভর্তুকি বাবদ ৫ হাজার ৩৫৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। সম্পাদনা : শোভন দত্ত