বাজার স্টাডি ও তথ্য সংগ্রহ ডিজিটাল অর্থনীতির মূল চ্যালেঞ্জ : প্রতিযোগিতা কমিশন
সাইদ রিপন : সম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল অর্থনীতি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে দেশের বাজারে ডিজিটাল অর্থনীতির মার্কেট রয়েছে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৩ সালে দ্বিগুন অর্থাৎ ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তবে সামনের দিনে এ বাজার সম্প্রসারণে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। চ্যালেঞ্জ দুটি হচ্ছে ডিজিটাল বাজার স্টাডি ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা নেটওয়ার্কের (আইসিএন) আয়োজনে এক ডিজিটাল কনফারেন্সের মাধ্যমে বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম।
মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, সদস্য সংস্থাগুলোর অভিজ্ঞতা এবং সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো ডিজিটাল অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে। এজন্য আমাদের কমিশন কঠোরভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ই-কর্মাসের বাজার সম্প্রসারণে বড় সুয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে হচ্ছে বড় বাজার রয়েছে এবং তরুণের আধিক্য রয়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে তথ্যের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পর্যাপ্ত তথ্য থাকলে ই-কমার্স বাজারকে পর্যাপ্ত সুবিধা দেয়। এজন্য তথ্যে সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেই কার্যকর সার্ভিস ও পণ্য দেওয়ায়ই মূল্য চ্যালেঞ্জ।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে দৃষ্টি দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ অর্থনীতির আকার দ্রুত বাড়ছে। গত দশ বছরে গড় জিডিপি বৃদ্ধি ৬ শতাংশেরও বেশি। ই-কমার্স থেকে দক্ষতা জোরদার করতে, বাংলাদেশ সরকার ই-বাণিজ্য প্রস্তুতি এবং আইসিটি অবকাঠামোসহ সাতটি নীতিমালায় জোর দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠির বিশাল ভোক্তা রয়েছে, সুতরাং এটি একটি উদীয়মান বাজার যা ই-বাণিজ্য ব্যবসায়ের বিশাল সুযোগ।
তিনি বলেন, সারাবিশ্ব জুড়ে প্রতিযোগিতার নীতিতে তিনটি মূল স্তম্ভ রয়েছে যেমনÑপ্রতিযোগিতামূলক বিরোধী চুক্তি, প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল অর্থনীতি ডেটা চালিত হওয়ায় ডিজিটাল বাজার ঐতিহ্যবাহি বাজার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সুতরাং ডেটা কিভাবে সংগ্রহ করা হয়, কিভাবে এটি ব্যবহার করা হয় এবং একত্রিত হয় এবং কিভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করা হয় তা অত্যন্ত প্রযুক্তিগত। এটি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পণ্য এবং পরিষেবার প্রায় সকল বাজারে ডেটা প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেয়। ডিজিটাল বাজারে একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী অবস্থানগুলোর অপব্যবহার এবং পূর্ববর্তী প্রতিযোগিতামূলক বিরোধী বিশ্লেষণকে পরিমাপ করার জন্য বাজার এবং সরঞ্জামগুলো সংজ্ঞায়িত করা খুব কঠিন।
এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারপারসন বলেন, আগামী ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বৈঠক করবে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। বৈঠকে ক্রেতা, ভোক্তা, ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারীসহ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। পেঁয়াজের বাজারদর নিয়ে প্রতিযোগিতা বিরোধী কিছু হচ্ছে কিনা এগুলো খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি বলেন, কৃষি পণ্যের প্রতিযোগিতায় আমরা দেখবো বাজার ঠিক আছে কিনা। বাজারে খেলোয়াড় উৎপাদনকারী, ক্রেতা ও সরবরাহকারী। সরকার হলো রেফারি। অনলাইনে পেঁয়াজ বেচাকেনা হচ্ছে ক্রেতারা লাভবান হচ্ছে। ক্রেতারা লাভবান হলে আমাদের কোন কথা থাকবে না তবে প্রতিযোগিতা বিরোধী কিছু হলেই আমরা দেখবো।
তিনি আরও বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন, ডিজিটাল প্রযুক্তিগুলো স্বাস্থ্য, কৃষি ও ব্যবসায়িক খাতে পাশাপাশি বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেনে অনেক অবদান রেখেছে ই-কমার্স। আমার দৃষ্টিতে, প্রতিযোগিতামূলক সংস্থাগুলোর জন্য মূল বিবেচনাটি হল, প্রতিযোগীতা বিরোধী ক্রিয়াকলাপ মোকাবেলার জন্য বাজার সমীক্ষা বা বাজার অনুসন্ধানের জন্য একটি বিশেষ ডিজিটাল অর্থনীতি ইউনিট তৈরি করা।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা দরকার। পাশাপাশি তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় ডেটা সেন্টার স্থাপন ও স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ডিজিটাল প্রচার সমর্থন করা উচিত। বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বাণিজ্যের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক বাজার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কমিশনটি ২০১৬ সালে গঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকার ভিশন ২০২১ গ্রহণ করেছে, ভিশন ২০৪১ গোলকে এসডিজি ২০৩০ এর সঙ্গে সংযুক্ত করে উন্নত দেশ হওয়ার প্রত্যাশা করছে। রেজা