মো. আখতারুজ্জামান : চটকদার বিজ্ঞাপন আর ছাড় অফারের লোভ দেখিয়ে পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। পণ্য ক্রয়ের মুল্য পরিশোধ করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও ইভ্যালি থেকে পণ্য পাচ্ছে না গ্রাহকরা। মূলত প্রচলিত আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে ইভ্যালি।
প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম খতিয়ে দেখছে প্রতিযোগিতা কমিশন। ইতিমধ্যে কমিশন তিনটি শুনানিও করেছে। ইভ্যালির কাছে তাদের ব্যবসার পলিসিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চেয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন। কয়েক দফা সময়ও নিছে ইভ্যালি। অনলাইন ভিত্তি প্রতিষ্ঠানটি বুধবার তাদের কাগজপত্র দেয়ার কথা রয়েছে বলে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা একমাত্র প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আইন বলছে, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেবা বা পণ্য সরবরাহ না করলে তা ভোক্তা অধিকার হরণ হবে। তবে সেখানে সময়ের কোনো উল্লেখ নেই। আর এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ইভ্যালিসহ বেশি কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ইভ্যালির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রাহকদের। এসব অভিযোগের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও অধিকাংশ অভিযোগ অনিষ্পত্তি অবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম জানান, দেশের ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকমের বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত ৪টি শুনানি করেছি। তাদের কাছে কিছু কাগজপত্র দিতে বলা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে সময় চেয়েছে। তিনি বলেন, ইভ্যালির বিষয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তি শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আমরা প্রথম শুনানিতে তাদেরকে জানিয়েছি তারা যেন আর দেড়শ আড়াই শতাংশ ছাড়ের অফার না দেয়। তারা আমাদেরকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এমন ছাড়ের অফার আর দিবে না। কাগজপত্র জমা দিলে বুঝা যাবে তাদের সমস্যা কোথায়।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও গত বছর ২৬ অগস্ট ইভ্যালির কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। আবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইভ্যালির পণ্য কার্ডে লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল। এক মাস পরে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে। গত বছরের ২৭ আগস্ট বিদেশে অর্থ পাচার ও ব্যবসায়ীক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ইভ্যালিডটকম লিমিটেড এবং এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হচ্ছে বিএফআইইউ। তবে এক মাস পরে ব্যাংক হিসাব আবার চালু করার অনুমতি দেয় বিএফআইইউ।