আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৩
লাগামহীন বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম, অস্বস্তিতে ক্রেতা
মাসুদ মিয়া : করোনার প্রভাবে লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবার। অনেকে সঞ্চয়ের শেষ অংশটুকু হারিয়ে পথে বসেছে।
তাদের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এমন সময় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে কারণ ছাড়াই লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে চাল, ডালের সঙ্গে যোগ হয়েছে ভোজ্যতেল, ডিম, পেঁয়াজ, রসুনের মূল্য বৃদ্ধি। শীতের সস্তা শাক, সবজির দামও মানুষকে ভোগাচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার কারণে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাড়তি দামে বিক্রয় হচ্ছে চাল। এদিকে ক্রেতারা অভিযোগ করেন, দাম বাড়ানোর পেছনে নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একের পর এক নিত্যপণোর দাম বাড়ছে। এদিকে খুচরা চাল বিক্রেতারা দুষছেন মিলারদের। তারা বলছেন, মিলারদের কারসাজিতে এখনও চালের দর বাড়তি। তারা সিন্ডিকেট করে মিল পর্যায় থেকে সব ধরনের চালের দর বাড়িয়ে দিয়েছে। যে কারণে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে চালের দর বেশি।প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ টাকায় থেকে ১০০ বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা। খোলা ভোজ্যতেল লিটার বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৭ থেকে ১৩০ টাকায়। দুই লিটার বোতলজাত তেল বিক্রয় হচ্ছে ২৪০ টাকা। ৫ লিটার বিক্রয় হচ্ছে ৫৯০ টাকা। গত একমাসে তেলের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা।
লক্ষীবাজারের খুচরা তেল বিক্রেতা ইয়াসিন বলেন, দাম কমছে না আমরা বাড়তি দামে তেল কিনে বাড়তি দামে বিক্রয় করছি। এদিকে মিরপুর পিরেররবাগ বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের অভাব নেই, তারপরও পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেন বুঝতে পারছি না। বাড়তি দামে কিনেছি বলে বাড়তি দামে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা। এদিকে আলুর দাম ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়, শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, শিম ৩০ টাকায় থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ৩০ টাকা, কেজি প্রতি কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি পিস লাউ আকার ভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ১০ টাকা বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকার মধ্যে। কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫৫ টাকায়, প্রতি কেজি জালি কুমড়া ৩০ টাকায়, ছোট মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও আদা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, রসুনের কেজি ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। এদিকে বেড়েছে ডিমের দামও। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায় থেকে ৯৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৫০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৬০ টাকা, ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
১০ টাকা দাম বেড়ে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি। ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। এসব বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংস। এছাড়া মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দামও স্থিতিশীল রয়েছে।
বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়, মহিষের মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায়। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং মাছ (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকার ভেদে) ১৮০ থেকে ৩২০ টাকা, মাগুর মাছ ৫০০ টাকা, মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, ফোলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি কৈ মাছ ৭০০ টাকা, কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, গুড়া বেলে ১২০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইর মাছ ৫০০ টাকা, রিঠা মাছ ২২০ টাকা ও কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও