আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৫
বারি ড্রাগন বদলে দিয়েছে ফটিকছড়ির নাদেরের জীবন
মতিনুজ্জামান মিটু : প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে ৫০ লাখ টাকার এ ফল বেচেছেন তিনি। নাদের খান একজন সফল বহুমুখি উদ্যোক্তা। ১৯৭২ সালে আমদানিকারক হিসেবে ব্যবসায় আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের একমাত্র পেড্রোলো পাম্প সাপ্লাইয়ার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন এবং আজ পর্যন্ত ওই ব্যবসা সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ২০০৩ সালে ফটিকছড়িতে ১৭০০ একর জমি নিয়ে চা বাগান তৈরি করেন। যা আজ হালদা ভ্যালি টি কোম্পানি হিসেবে সারা দেশে পরিচিত।
তিনি ২০০৬ সালে ওই বাগানে চা উৎপাদনের পাশাপাশি ১০ একর জায়গায় বারি উদ্ভাবিত বারি ড্রাগন ফল-১ এর বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তার বাগানে এ ফলের ৩৪০০টি গাছ রয়েছে এবং প্রায় সব গাছই ফল দিচ্ছে।
এ বছর তিনি ২০ টন বারি ডাগন ফল-১ উৎপাদন করেন। যা প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি করে ৫০ লাখ টাকা আয় করেন। তিনি বারি ড্রাগন ফল-১ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে হালদা ভ্যালী ব্র্যান্ড নামে বাজারজাত করে আসছেন।
এ ছাড়া তিনি প্রতিবছর বারি ড্রাগন ফল-১ এর চারা তৈরি এবং বিক্রিতে লাখ টাকারও বেশি আয় করেন। এবছর তিনি আরও ২০ হাজার বারি ড্রাগনÑ১ এর চারা লাগাবেন। এ সাফল্যের জন্য তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে কৃতজ্ঞ। সারাদেশে বারি উদ্ভাবিত বারি ড্রাগন ফল-১ সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশীয় পুষ্টি চাহিদা মেটানা ছাড়াও বিদেশ রপ্তানি করা সম্ভব। তাই তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বারি ড্রাগন ফল-১ এর চাষ। পুষ্টি ফলের বিকাশ।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. নাজিরুল ইসলাম জানান, বারি ড্রাগন ফল-১ দেশের সব জায়গায় চাষোপযোগী জাত। অনন্য স্বাদ, ঔষধি ও পুষ্টিগুণের কারণে ড্রাগন ফল বর্তমানে বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফলে পরিণত হয়েছে। দেশের সর্বত্রই কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এ ফলের চাষ করছেন।
বারি ড্রাগন ফল ১ হলো বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় জাত। বারি ড্রাগন ফলÑ১ নিয়মিত ফলদানকারি উচ্চফলনশীল জাত। ফলের আকার বড় এবং ওজন ৩৭৫ গ্রাম।
ফলের মিষ্টতার (টিএসএস) পরিমাণ ১৪ শতাংশ এবং খাদ্যোপযোগী অংশ প্রায় ৮১ শতাংশ। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে বছরে প্রায় ২০ থেকে ১০০টি ফল সংগ্রহ করা যায়। গড় ফলন প্রতি গাছে ১৩ কেজি বা হেক্টর প্রতি ৬০ টন।
বারি ড্রাগন ফল-১ বাংলাদেশের উচু ও মাঝারি উচু জমিতে চাষোপযোগী একটি উন্নত জাত। এ ফল চাষ করে একটি পিলার (৪টি পূর্ণাঙ্গ গাছ) থেকে প্রায় ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। প্রতিবিঘা জমিতে (৩৩ শতক বা ০.১৩ হেক্টর) জমি থেকে খুব সহজেই ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ করা যায়। ড্রাগন ফল কিছুটা হলেও খরা সহিষ্ণু। এ ফলের বাজার মূল্য বাংলাদেশের অন্য যে কোনো ফলের বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। এতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও