আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ২
ষড়যন্ত্র নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী
অর্থনীতি ডেস্ক : মানুষের জীবন-মান উন্নত হলে, তারা ভালো থাকলেই একটা আঘাত আসার আশংকা সৃষ্টি হয়, সেই কারণেই সকলকে একটু সতর্ক থাকা দরকার । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে যখন ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হলো, ব্যাপকভাবে ফসল উৎপাদন হলো, কল-কারখানা চালু হলো, উন্নয়নের পথে দেশ এগিয়ে যেতে লাগলো, তখনই ১৫ই আগস্টের মতো ঘটনা ঘটলো।
মঙ্গলবার সকালে একনেক সভায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখনো ভ্যাকসিন আনতে পারেনি, সেখানে বাংলাদেশ শুরু করেছে। যখন গবেষণা চলছিল, আমরা তখনই অগ্রীম টাকা দিয়ে রেখেছিলাম। মানুষ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিল বলেই এগুলো করতে পেরেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সবার পরিশ্রমেই আমরা করোনাভাইরাসকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। করোনা মহামারীর মধ্যে যখন সারাবিশ্বের অর্থনীতি অচল, উন্নত দেশগুলোও যখন ভ্যাকসিন দিতে পারেনি, আমরা বাংলাদেশে তখন ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি এবং একটি দৃষ্টান্ত আমরা দেখাতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস কেবল আমাদের ওপর নয়, সারাবিশ্বের ওপরই প্রভাব ফেলেছে। সারাবিশ্বে মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভৌগলিক সীমারেখায় ছোট হলেও আমাদের দেশ জনসংখ্যার দিক থেকে বড়। সেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টার মাধ্যমে আমরা কোভিড মোকাবেলাতেও সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যেমন বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি, তেমনি আর্থিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। একইসঙ্গে ভ্যাকসিনও নিয়ে এসেছি। অনেক উন্নত দেশও এখনো ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করতে পারেনি। কিন্তু যখন গবেষণা হচ্ছিল, তখন থেকেই এ ভ্যাকসিন কেনার জন্য সব জায়গায় আমরা যোগাযোগ করেছি। আগাম অর্থ দিয়ে আমরা বুকিং রেখেছিলাম, যেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের পর ভ্যাকসিন বিক্রি শুরু হলেই আমরা ভ্যাকসিনটা পাই এবং দেশবাসীকে দিতে পারি। আমরা সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। দেশবাসীও ধৈর্য ধরেছে। তাদের সহযোগিতার জন্যই আজ তাদের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ঘনবসতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেক উন্নত দেশেরই হয়তো এ চ্যালেঞ্জ ছিল না। তাদের জনসংখ্যা কম, ফলে কাজ করা সহজ। আমরা আমাদের জনসংখ্যার বিষয়টি মাথায় রেখেই পদক্ষেপ নিয়েছি।
প্রকল্প প্রস্তাবনা বলছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ২০৯ কিলোমিটার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি চারলেনে রূপান্তর, ও সার্ভিস লেন তৈরির জন্য সরকার ব্যয় করবে ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা। এছাড়া আলোচনার টেবিলে তোলা হয়েছে মোট নয়টি প্রকল্প। যার মধ্যে রয়েছে, বিটিসিএলের ৯৪৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার ইন্টারনেট প্রটোকল সেবার উন্নয়ন প্রকল্পটিও। সভায় দেড় বছর সময় ও ৫৩৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে অনুমোদন দেয়া হতে পারে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি। এক বছর সময় আর ৩১ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন প্রকল্পটিও।
বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘বিটিসিএল-এর ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (প্রথম সংশােধিত) প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প, তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘পশ্চিম গোপালগঞ্জ সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (প্রথম পর্যায়)’, ‘চট্টগ্রাম জেলাধীন হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন থেকে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ (দ্বিতীয় সংশােধিত)’ প্রকল্প এবং ‘ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলাধীন দৌলতখান পৌরসভা ও চকিঘাট এবং অন্যান্য অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা’ প্রকল্প, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘কাজুবাদাম, ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প এবং ‘অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন’ প্রকল্প।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভায় অংশ নেন। সূত্র : সারাবাংলা, বাংলাট্রিবিউন, যমুনা টিভি, সময় টিভি অনলাইন। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও