২৫ দেশের মধ্যে কাগজবিহীন ক্রস-বর্ডার বাণিজ্য শুরু বাংলাদেশের ব্যয় প্রায় ৩৩ ভাগ কমার সম্ভাবনা
সোহেল রহমান : এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘এসকাপ’ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য দ্রæত সম্পাদনের লক্ষ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাগজবিহীন ক্রসবর্ডার বাণিজ্য শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। ‘ফ্রেম-ওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন ফ্যাসিলিটেশন অব ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক চুক্তির আওতায় এ বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এ চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্পাদনের সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে। ‘ইউনেসকাপ’-এর মতে, এ চুক্তির বাস্তবায়ন এবং বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ‘বাণিজ্য সহজিকরণ চুক্তি’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যয় প্রায় ৩৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে বাংলাদেশ। যার আর্থিক মূল্য বছরে প্রায় ৭০ কোটি ডলার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কোভিড-১৯-এর ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের (আমদানি-রপ্তানি) ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা দূরীকরণে পেপারলেস ট্রেড/ ডিজিটাল ট্রেড পদ্ধতি ইতোমধ্যেই সমাদৃত হয়েছে। কোভিড-উত্তর বিশ্ববাণিজ্যে বাণিজ্য সহজীকরণে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। চুক্তিটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সহজ ও নমনীয়। বাংলাদেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, ই-কমার্স ও ডিজিটাল অর্থনীতি গঠনে চুক্তিটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় হবে। বিশেষত এ চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘এজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অগ্রগতি হবে এবং বাংলাদেশ অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে। এছাড়া সরকারের ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ ও ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডে প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে সম্ভাব্য বাণিজ্য সংকোচন মোকাবেলায় বাংলাদেশ এ চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক কারিগরি সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে।
জানা যায়, ‘ইউনেসকাপ’-এর সহায়তায় ২০১৬ সালে এ চুক্তিটি প্রণয়ন করা হয়। কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত ডাটা ও ডকুমেন্ট আদান-প্রদান সহজীকরণের লক্ষ্যে এ চুক্তিটি গৃহীত হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘এসকাপ’ভুক্ত ৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশ চুক্তিটি অনুসমর্থন করেছে। বাংলাদেশ, আজারবাইজান, চীন, ইরান, ফিলিপাইন ইতোমধ্যেই চুক্তিটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনুসমর্থন করে চুক্তির পক্ষ হয়েছে। এছাড়া আর্মেনিয়া ও কম্বোডিয়া চুক্তিতে সই করেছে। ‘এসকাপ’ভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোও ইচ্ছে করলে এ চুক্তির আওতায় আসতে পারবে। এ চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো তাদের বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ই-কমার্স ও ডিজিটাল ইকোনমির ক্ষেত্রে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারে।